গাজীপুর প্রতিনিধি রাকিব হাসান আকন্দ দৈনিক শিরোমণিঃ
গাজীপুরের শ্রীপুর পৌরসভার কেওয়া দক্ষিন খন্ড (ফখরুদ্দীন টেক্সটাইল মিলস) সংলগ্ন এলাকায় আগুনে ৩৬টি পোশাক শ্রমিকের বসতঘর পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। তবে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। স্থানীয় ওসমান গণির মালিকানাধীন ভাড়া বাড়িতে শনিবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। ওই বাড়ির প্রত্যেক ভাড়াটিয়া স্থানীয় বিভিন্ন পোশাক কারখানার শ্রমিক।ওইসব ঘরের বেশিরভাগ ভাড়াটিয়া ঈদের ছুটিতে বাড়ি চলে যাওয়ায় ঘরগুলো তালাবদ্ধ ছিল। এতে সকল বসতঘর মালামালসহ পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। প্রতিটি ঘরে একটি করে ফ্রিজ, টিভি ও খাট ছিল। অগ্নিকান্ডে সব পুড়ে যাওয়ায় প্রতিটি বসত ঘরের বাসিন্দারা এখন নি:স্ব হয়ে পড়েছেন।প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, রাত ১২টার দিকে হঠাৎ একটি ঘরের চাল দিয়ে ধোঁয়া বের হতে থাকে। পরে চালের টিনের একটু একটু শব্দ একজন ঘর থেকে বের হয়ে দেখে আগুন জ¦লছে। আগুন মুহূর্তের মধ্যে সকল ঘরে ছড়িয়ে পড়ে।বাড়ির ভাড়াটিয়া মঈন খান স্থানীয় ফখরুদ্দিন চেক্সটাইল মিলস লিমিটেডের প্যাকিং অপারেটর। তিনি জানান, ঈদের ছুটিতে সপরিবারে বেড়াতে গিয়েছিলেন। আগুনের পোড়ার খবর শোনে রোববার ভোরে বাসায় এসে ঘরের তালা খুলেন। তাঁর ঘরের টিভি, ফ্রিজ, ওয়্যারড্রপ, চাল, ডাল খাদ্যপণ্যসহ সকল প্রকার আসবাব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। কারখঅনায় চাকুরী করে যা সঞ্চয় করেছিলেন সব শেষ হয়ে এখন তিনি নি:স্ব।ভাড়াটিয়া স্থানীয় ডেনিমেক গার্মেন্টসের সুইং অপারেটর হুমায়ুন কবির বলেন,ঈদের ছুটিতে ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়া উপজেলার কুশমাইল গ্রামের বাড়িতে গিয়েছিলেন। রাতেই খবর পান ঘরে আগুণ লেগেছে। ভোরে এসে দেখেন তার ঘরের টিভি, ফ্রীজ, ওয়ারড্রপসহ সকল মালামাল পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এখন আমি কিভাবে কিস্তির টাকা পরিশোধ করব।ফখরুদ্দিন টেক্সটাইলের কোয়ালিটি কন্ট্রোলার রাকিব হাসান জানান, মদ্য রাতে হঠাৎ বাহিরে মানুষের চিৎকার শুনে ঘর থেকে বের হয়ে দেখি দাউ দাউ করে আগুণ জ¦লছে। পরে স্ত্রী ও একমাত্র শিশু মেয়েকে নিয়ে দৌড়ে ঘর থেকে বের হয়ে প্রাণে রক্ষা পায়। তবে আগুণে ঘরে থাকা সকল প্রকার মালামাল ও আসবাব পত্র পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। আমরা সবাই এখন নি:স্ব হয়ে গেছি। তিল তিল করে জমানো আমাদের সহায় সম্বল বলতে কিছু রইলো না।ফাতেমা বেগম পাশর্^বর্তী বৈরাগীরচালা এলাকার আমান গার্মেন্টসের অপারেটর।তিনি জানান, তার যা সম্পদ ছিল সব পুড়ে গেছে। আগুন লেগে মুহুর্তের মধ্যে সকল ঘরে ছড়িয়ে পড়ে। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে এখন তার বেঁচে থাকার কোনো সম্বল নেই।আমান টেক্সটাইলের প্যাকিং ম্যান জেনারুল হক অনু বলেন, ঈদের বেতন ও বোনাস পেয়ে ঘরের আসবাবপত্রসহ টিভি, ফ্রীজ ও অন্যান্য মালামাল কিনে ছুটিতে গ্রামের বাড়ি গিয়েছিলাম। এখন আমার আর কিছু রইলো না।কিস্তিতে
জিনিসপত্র কিনেছিলাম এগুলোর টাকা এখনো পরিশোধ করিনি। আগুনে আমার সব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।পেয়ে শ্রীপুর ফায়ার সার্ভিসের পরিদর্শক মোস্তাফিজুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, খবর পেয়ে মিনিট দশেকের মধ্যে দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আধাঘন্টা চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। আগুনে সকল মালামালসহ ৩৬টি বসতঘর পুড়ে ছাই হয়ে যায়। ক্ষয়ক্ষতির তাৎক্ষণিক পরিমাণ নির্ণয় করা যায়নি। একটি ঘরের জায়গায় দুটি ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। ঘরগুলো খুবই ছোট হওয়ায় আগুন নেভাতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারনা করা হচ্ছে বৈদ্যুতিক শট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়ে থাকতে পারে।