ডেস্ক রিপোর্ট দৈনিক শিরোমণিঃ জুয়া খেলায় “মাদক হোম ডেলিভারি” করার কারণে চাইলেই পেয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন ধরনের মাদকদ্রব্য। আর সে মাদক সেবনে নেশায় ধবংস হচ্ছে যুবসমাজ। খানজাহান আলী থানার আটরা গিলাতলা ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ড ও গিলাতলা ৫ নং ওয়ার্ডের গাজী পাড়ার বিভিন্ন অলিতে গলিতে ‘মাদকদ্রব্য হোম ডেলিভারিতে’ ক্রয়-বিক্রয় হচ্ছে। থানা এলাকার গ্রামগঞ্জে পাড়া মহল্লায়ও চলছে বিভিন্ন মাদকের জমজমাট ব্যবসা। এইসব মাদকের টাকা জোগাড় করতে মাদক সেবনকারীরা এলাকায় চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি সহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ড করছে। কোভিড-১৯ মহামারি করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় সরকার ঘোষিত কঠোর লকডাউনে বিধিনিষেধ না মেনে বিভিন্ন এলাকায় মাদক ব্যবসা বেড়েই চলেছে, সেই সাথে টাকা দিয়ে জুয়াখেলাসহ বিভিন্ন খেলা অবাধে চলছে। যারা বিভিন্ন মাদকদ্রব্য সেবন করে ও জুয়া খেলে, তাদের এইসবের টাকা জোগাড় করতে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ড করতে হয়। বিশেষ কৌশলে মাদক ব্যবসায়ীরা হোম ডেলিভারি করছে নানারকম মাদক নিয়ে। এসব মাদক সেবন করে মানুষের জীবন ধ্বংস করছে, আর অন্যদিকে মাদক ও জুয়ার টাকা জোগাড় করতে এসবের সাথে জড়িত হচ্ছে নতুন করে স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা। অনেকেই বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের জীবনে অনেক বড় ক্ষতি হচ্ছে। বিশেষ করে বিভিন্ন মাদকদ্রব্য অর্ডার করলেই হোম ডেলিভারি করতে পারছে সংশ্লিষ্ট মাদক ব্যবসায়ীরা। মাদক সেবনকারীরাও খুব সহজেই কাছে পেয়ে যাচ্ছে মাদক। এই মাদক ও জুয়া সিন্ডিকেট চক্রের সাথে অনেকেই জড়িত আছে বলে জানা গেছে। সচেতন মহল ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অনেক চেষ্টা করছেন মাদক নিয়ন্ত্রণ করার জন্য, কিন্তু নতুন নতুন কৌশলে মাদক ব্যবসা করা হচ্ছে আর অপরাধমূলক কর্মকান্ডও বাড়ছে বলে অভিমত প্রকাশ করেন অনেকেই। গিলাতলা গাজী পাড়ার মরহুম গাজী আজিবর রহমানের পুত্র বড় মাদকের ডিলার(মাদক স¤্রাট) গাজী হাদিউজ্জামান হাদু (৪০) গত ২০ জুলাই বেনাপোল পোর্ট থানা পুলিশের হাতে ২ কেজি গাঁজা ১টি ইজিবাইক সহ আটক হয়ে যশোর জেলহাজতে রয়েছে। এব্যপারে বেনাপোল পোর্ট থানায় মাদক আইনে মামলা হয়েছে। যার নং-২৬, তাং-২০/০৭/২০২১। হাদু গাজী দির্ঘদিন ধরে বেনাপোল থেকে মাদক এনে খানজাহান আলী থানা এলাকায় মাদক সাপ্লাই করতো, মাদক স¤্রাট হাদু গাজী আটক হলেও গিলাতলা দক্ষিণপাড়ার নাম করা এক মাদক ব্যবসায়ি বর্তমানে চালিয়ে যাচ্ছে মাদক ব্যবসা । এছাড়া গিলাতলা দক্ষিনপাড়া এলাকার উঠতি বয়সের কিশোররা মাদক মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি হাইকোর্ট থেকে জামিনে এসে দেদারছে চালিয়ে যাচ্ছে গাঁজার ব্যবসা। সে নিজে এবং তার বেতনভুক্ত ১০ থেকে ১২ জনের একটি টিম খানজাহান আলী থানা এলাকায় চাহিদা অনুযায়ী মাদক সেবীদের ঘরে মাদক ডেলিভারি দিয়ে থাকে।আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মাদক বিরোধী অভিযান চালায়, কিছু অপরাধী গ্রেফতার হয়, তারা আদালত থেকে জামিনে এসে আবার সেই অপরাধ করে। মাদক ব্যবসায়ীদের কাছে গিয়ে মাদক কেনা ক্রেতাদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় এখন নতুন নতুন কৌশলে মাদক বেচাকেনা হচ্ছে, যা অভিযানে ধরা যাচ্ছে না বলে পুলিশ জানায়। এলাকায় জীবন ধ্বংসকারী ফেনসিডিল, ইয়াবা ট্যাবলেট, মদ ও গাঁজাসহ বিভিন্ন মাদকদ্রব্য অর্ডার করলেই হাতের কাছে পাচ্ছে (হোম ডেলিভারি)। এইসব মাদক সেবন করে একদিকে যুব সমাজ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে, অন্যদিকে মাদকের টাকা জোগাড় করতে মাদক সেবনকারীরা এলাকায় চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, অপহরণ, চাঁদাবাজি সহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ড করছে। মাদক সেবন করা অবস্থায় নেশার মধ্যে নারী নির্যাতনের ঘটনাও বেড়ে গেছে থানা এলাকাতে । সেই সাথে জুয়া(তাস) ও ডিজিটাল চায়না জুয়া খেলার টাকা জোগাড় করতে চুরি, ডাকাতি, ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ড করছে মাদক সেবনকারী ও জুয়াড়ীরা। সূত্র জানায়, অনেক মাদক ব্যবসায়ী ও জুয়ার মালিকরা নিজস্ব সিন্ডিকেট তৈরি করে মোবাইল ফোনে কল করে অথবা ম্যাসেজ এর মাধ্যমে কাঙ্খিত স্থানে পৌঁছে তাদের কারবার করছে । এসব মাদক সেবন করে ১২-১৮ বছরের কিশোর ও ১৮-৪০ বছরের যুবক যুবতীসহ সব বয়সের লোকজন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যগণ সততা ও সাহসী ভুমিকায় কাজ করতে নতুন কৌশলে অভিযান পরিচালনা করলে হয়ত কিছুটা মাদক নিয়ন্ত্রণসহ জুয়া বন্ধ করা সম্ভব বলে মনে করছেন সচেতন মহল। প্রশাসন চাইলেই জুয়া বন্ধ করাসহ কিশোর গ্যাং মাদক, সন্ত্রাসীদের আটক করা সম্ভব বলেও মনে করেন সচেতন মহল ।