রেদোয়ান হাসান সাভার,ঢাকা প্রতিনিধি দৈনিক শিরোমণিঃ ঢাকার সাভারে ৫শ টাকা চুরির ঘটনা দেখে ফেলায় মো. ফেরদৌস (১১) নামে এক শিশুকে শ্বাসরোধ করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে সহকর্মী পরিবহন শ্রমিকের বিরুদ্ধে। এঘটনায় আশুলিয়া ক্লাসিক পরিবহনের বাসের এক শ্রমিককে আটক করলেও অপরজন পলাতক রয়েছে।। এঘটনায় মো. হৃদয় নামে ক্ল্যাসিক পরিবহনের বাসের এক স্টাফকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।রোববার (১৭ অক্টোবর) রাত ১২টার দিকে আশুলিয়ার বাইপাইল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। সোমবার ভোর সাড়ে ৪টার দিকে বাইপাইল এলাকা থেকে মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।ফেরদৌস আশুলিয়া ক্ল্যাসিক পরিবহনে কাজ করতো। আশুলিয়ার পল্লীবিদ্যুৎ বালুর মাঠ এলাকায় পরিবারের সঙ্গে ভাড়া বাসায় থাকতো। সে শেরপুর জেলার সদর থানার মুন্সিপাড়া গ্রামের বাসচালক রইচ উদ্দিনের ছেলে। আটক হৃদয় ক্ল্যাসিক পরিবহনের কন্ডাক্টর। ঘটনার পর থেকে একই পরিবহনের হেলপার মো. পারভেজ পলাতক রয়েছেন।সোমবার (১৮ অক্টোবর) সকাল ১০টার দিকে আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সামিউল ইসলাম এসব তথ্য জানান।নিহত শিশুর বড় বোন রুবিনা বেগম বলেন, আমার বাবা আশুলিয়া ক্ল্যাসিক পরিবহনের চালক। ছোট ভাই ফেরদৌস একটু চঞ্চল প্রকৃতির হওয়ায় তিন দিন আগে ওকে আশুলিয়া ক্ল্যাসিক পরিবহনে কাজে পাঠায়। আজ (সোমবার) সকালে আমার ভাইয়ের লাশ বাইপাইল রাস্তা থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। বাসের হেলপার ও কন্ডাক্টর আমার ভাইকে হত্যার পর লাশ সড়কে ফেলে রাখে। পরে ভোর রাতে তারাই পুলিশকে খবর দিয়ে আনে। পুলিশ জানায়, রাত ১২ টার দিকে রাজধানীর আব্দুল্লাহপুর থেকে বাস নিয়ে বাইপাইল পৌঁছায়। পরে গাড়ির মধ্যে কন্ডাক্টর হৃদয় ও হেলপার পারভেজ ঘুমিয়ে পড়েন। এসময় শিশু ফেরদৌস গাড়িতেই ছিলো। ঘুম ভাঙলে তার পকেট থেকে ৫শ টাকা খোয়া গেছে বলে জানতে পারেন হৃদয়। এসময় শিশু ফেরদৌস তার পকেট থেকে পারভেজ টাকা চুরি করেছে বলে জানায়। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে পারভেজ ও হৃদয়ের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। এসময় পারভেজকে লাঠি দিয়ে আঘাত করেন হৃদয়। পরে ক্ষিপ্ত হয়ে পারভেজ শিশু ফেরদৌসকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। পরে তারা দুজন মিলেই নিহত ফেরদৌসের লাশ সড়কে ফেলে রেখে পুলিশকে দুর্ঘটনার খবর দেয়। সাভার হাইওয়ে পুলিশ প্রথমে ঘটনাস্থলে পৌঁছলেও মরদেহে দুর্ঘটনার কোন চিহ্ন না পাওয়ায় বিষয়টি থানা পুলিশকে অবহিত করে। পরে ভোর রাতে আশুলিয়া থানা পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে। এসময় হৃদয়কে আটক করা গেলেও পারভেজ ঢাকা দেয়।আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সামিউল ইসলাম বলেন, রাতেই এঘটনায় আশুলিয়া ক্ল্যাসিক পরিবহনের কন্ডাক্টর হৃদয়কে আটক করা হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে, ৫শ টাকা চুরির ঘটনা দেখে ফেলায় ওই শিশুকে হত্যা করা হয়েছে বলে জানা গেছে। তদন্ত করে প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে। এ ঘটনায় থানায় একটি হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। অভিযুক্ত পারভেজকে আটকের চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি।