নিজস্ব প্রতিবেদক :
বাংলাদেশের সড়ক নিরাপত্তা উন্নয়নে বিশ্বব্যাংক-ব্র্যাক একসঙ্গে কাজ করার অঙ্গীকার করেছে। বাংলাদেশের সড়ক নিরাপত্তা উন্নয়নে সহযোগিতা করার জন্য বিশ্বব্যাংক ও ব্র্যাক এক সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেছে।
শনিবার একটি অনলাইন ইভেন্টে তার কার্যক্রম উদ্বোধন করেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
ইভেন্টের শিরোনাম ছিল ‘সড়ক নিরাপত্তা সহযোগিতা: ২০৩০ সালের মধ্যে সড়ক দুর্ঘটনা মৃত্যু ৫০ শতাংশ হ্রাস’। ২০৩০ সালে দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় ৫০ শতাংশ মৃত্যু কমানোর জন্য কাজ করবে বিশ্বব্যাংক। এর পাশাপাশি সহযোগিতার অংশ হিসাবে যশোর-ঝিনাইদহ করিডোর বরাবর ৪৮ কিলোমিটার একটি সড়ক নিরাপত্তা সচেতনতা অভিযানও পরিচালিত হবে এই অভিযানটি গত জুন মাসে অনুমোদিত বিশ্বব্যাংকের সমর্থিত উইকেয়ার প্রকল্পের পরিপূরক।
ওই প্রকল্পের লক্ষ্য ভোমরা-সাতক্ষীরা-নাভারন এবং যশোর-ঝিনাইদহে বিদ্যমান দুই লেনের মহাসড়ককে নিরাপদ চার লেনে উন্নীত করা। গণপরিবহনে নারীদের সুরক্ষার উন্নয়নে এবং নারী চালকসহ চালকদের প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা বৃদ্ধির ব্র্যাক এবং বিশ্বব্যাংক অংশীদার হবে। উল্লেখ্য, ব্যাক ড্রাইভিং স্কুলের উদ্যোগে উইমেন বিহাইন্ড দ্যা হুইলস’ এর মাধ্যমে এ পর্যন্ত ২১৪ জন নারী পেশাদার চালক হিসাবে প্রশিক্ষণ পেয়েছেন।
বিশ্বে প্রতি বছর সাড়ে ১৩ লাখ মানুষ সড়ক দুর্ঘটনা মারা যান। বাংলাদেশে ৫ থেকে ১৪ বছর বয়সী শিশুদের মৃত্যুর চতুর্থ প্রধান কারণ হচ্ছে সড়ক দুর্ঘটনা। এখানে দুর্ঘটনায় আক্রান্তদের ৬৭ শতাংশই ১৫ থেকে ৪৯ বছর বয়সী। ভার্চুয়াল ইভেন্ট প্রধান অতিথি হিসাবে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। আরও অংশ নেন বাংলাদেশে নিযুক্ত বিশ্বব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত কান্ট্রি ডিরেক্টর ড্যানডেন চ্যান, ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ।
এই উদ্যোগের প্রশংসা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আগামী এক দশকের মধ্যে বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুহার অর্ধেকে নামিয়ে আনতে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনের পদক্ষেপ নিয়েছে। সড়ক সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য পথচারীদের অধিকতর সচেতন করা, চালকদের প্রশিক্ষণ দেয়া এবং উন্নত রাস্তা তৈরি সব মিলিয়ে একটি বিশাল উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। নারী গাড়ি চালকদের প্রশিক্ষণ ও কর্মসংস্থানের ব্যাপারে তার মন্ত্রণালয় সার্বিক সহায়তা করবে বলেও আশ্বস্ত করে মন্ত্রী।
বিশ্বব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত কান্ট্রি ডিরেক্টর বলেন, সড়ক নিরাপত্বা যে কোনো দেশের জন্য অর্থনৈতিক ও উন্নয়নের অগ্রাধিকারে পরিণত হয়েছে। একটি জাতীয় সড়ক সুরক্ষা কর্মসূচির মাধ্যমে সড়ক নিরাপত্বা নিশ্চিতকরণে সরকারকে সহায়তা করতে পেরে আমরা গর্বিত। ব্র্যাকের সঙ্গে আমাদের অংশীদারিত্ব বাংলাদেশের গ্রামীণ ও শহর অঞ্চলে সড়ক নিরাপত্বা উন্নয়নের জন্য এই কর্মসূচিতে সহায়তা জোরদার করবে। ’
২০১১ সাল থেকে ব্র্যাকের কমিউনিটি রোড সেফটি অ্যাওয়ারনেস প্রোগ্রামের আওতায় ১২ লাখের বেশি মানুষ সড়কের নিরাপদ ব্যবহার বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিয়েছে। এছাড়া ৫ হাজার ৪৫১ জন স্কুলশিক্ষক এবং ৪ লাখ ৯৮ হাজার শিশু শিক্ষার্থী সড়ক সুরক্ষায় বিশেষ সচেতনতা প্রশিক্ষণ পেয়েছে।