জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের বার্ষিক আয়কর রিটার্ন দাখিলের সময় বাড়িয়েছে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
এনবিআরের জনসংযোগ দপ্তর বিভাগ থেকে জানানো হয়েছে, পুরো ডিসেম্বর মাস জুড়ে করদাতারা তাদের রিটার্ন জমা দিতে পারবেন।
মঙ্গলবার রাতে এ বিষয়ে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। প্রজ্ঞাপনে এনবিআর বলেছে, ব্যক্তিশ্রেণির করদাতার কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে সৃষ্ট অসুবিধার কথা বিবেচনায় নিয়ে ২০২১-২২ করবর্ষের আয়কর রিটার্ন দাখিলের সময়সীমা ৩০ নভেম্বর থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বর্ধিত করা হলো।
এর আগে চট্টগ্রাম চেম্বারসহ সংশ্লিষ্ট অংশীজন বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনা করে সময় বাড়ানোর দাবি জানায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে সময় বাড়ানো হয়েছে বলে জানান এনবিআরের কর্মকর্তারা।
এনবিআরের জনসংযোগ দপ্তরের পরিচালক সৈয়দ এ মুমেন সাংবাদিকদের বলেন, সার্বিক অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে আয়কর রিটার্ন জমার সময় এক মাস বাড়ানো হয়েছে।
সরকার বার বার রিটার্ন জমার সময় বাড়ানোর সংস্কৃতি থেকে ২০১৬ সালে বেরিয়ে আসার নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে থেকে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর করে ৩০ নভেম্বর আয়কর দিবসে রিটার্ন দাখিল শেষ দিন নির্দিষ্ট করা হয়। এ নিয়ে সে বছরই সংসদে আইন পাস হয়।
এনবিআর বলছে, দেশে কোনো মহামারি কিংবা দুর্যোগ পরিস্থিতি হলে সরকারের বিশেষ ব্যবস্থায় যে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে। এর অংশ হিসেবে করোনা সংক্রমণের মধ্যে আয়কর অধ্যাদেশ ১৯৮৪ এর ১৮৪ জি ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে আয়কর রিটার্ন জমার সময় বাড়ানো হয়েছে।
আইন অনুযায়ী, নির্ধারিত সময়ে রিটার্ন জমা না দিলে জরিমানা দিতে হয়। তবে জরিমানা এড়াতে সময় বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে। যৌক্তিক কারণ দেখিয়ে আবেদন করলে তিন থেকে ছয় মাস পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়।
গত করবর্ষে মোট ২৪ লাখ ৩১ হাজার রিটার্ন জমা পড়ে।
এনবিআরের তথ্য অনুযায়ী, সোমবার পর্যন্ত সারা দেশে ২৯ লাখ রিটার্ন জমা পড়েছে। বর্তমানে করদাতা শনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন) ৭০ লাখের বেশি। জমা পড়া রিটার্নের বড় অংশ চাকরিজীবী ও পেশাজীবী।
গত বছর করোনায় ব্যবসা-বাণিজ্যে বিরূপ প্রভাব পড়ায় রিটার্নের সংখ্যা তুলনামূলক কম ছিল। করোনা নিয়ন্ত্রণে আসায় দেশের অর্থনীতি, ব্যবসা-বাণিজ্য ঘুরে দাঁড়িয়েছে। ফলে এবার ব্যবসায়ীদের পক্ষে উল্লেখযোগ্য রির্টান দাখিল হয়েছে বলে জানিয়েছে এনবিআর।