বলিউড বাদশাহ শাহরুখ খান নোংরা রাজনীতির শিকার। তাকে টার্গেট করে ফাঁসানো হয়েছে। শাহরুখের ইমেজ নষ্ট করার চেষ্টা করা হয়েছে। এমনই দাবি করলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সরাসরি আরিয়ান খানের গ্রেফতার নিয়ে কিছু বললেন না। তবে শাহরুখ খানকে নিশানা করা হচ্ছে বলেই অভিযোগ তুললেন তৃণমূল কংগ্রেস প্রধান মমতা। অভিযোগ করলেন, দেশবাসীকে বিজেপির ‘নিষ্ঠুর, অগণতান্ত্রিক এবং অনৈতিক’ মনোভাব সইতে হচ্ছে।
বুধবার মুম্বাইয়ে বিশিষ্টজনদের সঙ্গে দেখা করেন মমতা। সেখানে বলিউডের পরিচালক মহেশ ভাট জানতে চান যে ডানপন্থী শক্তিদের থেকে স্বাধীনচেতা মানুষদের কীভাবে রক্ষা করা হয়। সেই প্রশ্নের জবাবে মমতা বলেন, ‘বাহুবলী নয়, ভারতবাসীরা জনশক্তিতে বিশ্বাস করেন। বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্য হল আমাদের মূল ভিত্তি। দুর্ভাগ্যজনকভাবে, দেশবাসীকে বিজেপির নিষ্ঠুর, অগণতান্ত্রিক এবং অনৈতিক মনোভাব সইতে হচ্ছে।’
সঙ্গে তিনি যোগ করেন, ‘আমি জানি, মহেশ ভাটকে নিশানা করা হচ্ছে, শাহরুখকে নিশানা করা হচ্ছে। আরও অনেকে আছেন। কেউ মুখ খুলতে পারেন। কেউ খুলতে পারেন না।’
গত ২ অক্টোবর গোয়াগামী প্রমোদতরী থেকে পাকড়াও করা হয় আরিয়ানকে। মাদক মামলায় তাকে গ্রেফতার করেছিল নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরো (এনসিবি)। তারপর থেকে একাধিবার তার জামিনের আর্জি খারিজ হয়ে গিয়েছিল। ২৮ অক্টোবর শর্তসাপেক্ষে আরিয়ানের জামিন মঞ্জুর করে বম্বে হাইকোর্ট।
মুম্বাইয়ের আর্থার রোড জেল থেকে ছাড় পান ৩১ অক্টোবর। পরে সেই জামিনের বিস্তারিত রায়ে হাইকোর্টের তরফে জানানো হয়, মাদক মামলায় আরিয়ান যে ষড়যন্ত্র করেছেন, প্রাথমিকভাবে তেমন কোনো প্রমাণ মেলেনি। এখনও পর্যন্ত এমন কোনও প্রমাণ মেলেনি, যাতে আদালত নিশ্চিত হওয়া যায় যে একই বেআইনি কোনও কাজ করার লক্ষ্য ছিল আরিয়ান, আরবাজ মার্চেন্ট এবং মুনমুন ধামেচার।
১৪ পৃষ্ঠার রায়ে বিচারপতি নীতিন সামব্রে জানিয়েছেন, মাদক মামলায় ষড়যন্ত্রের জন্য আরিয়ানদের একই অপরাধের উদ্দেশ্য ছিল বলে নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরোর (এনসিবি) তরফে যে দাবি করা হয়েছে, তা খারিজ করে দেওয়া হচ্ছে। হাইকোর্ট জানিয়েছে, অভিযুক্তরা ক্রুজে যাচ্ছিলেন – শুধুমাত্র সেই ভিত্তিতে তাদের বিরুদ্ধে মাদক আইনের ২৯ নম্বর ধারা প্রয়োগ করা যাবে না।
বিচারপতি জানান, ষড়যন্ত্রের অভিযোগের ভিত্তি হিসেবে আবেদনকারীদের কাছে কোনো মাদক ছিল কিনা, তা আদালতকে খতিয়ে দেখতে হবে। সেখানে আরিয়ানের থেকে কোনো মাদক উদ্ধার হয়নি। আরবাজ এবং মুনমুনের থেকে যে মাদক উদ্ধার করা হয়েছে, তা মাদক আইন অনুযায়ী ‘কম’। সেই পরিস্থিতিতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের ধারা প্রয়োগ করতে ‘ইতিবাচক প্রমাণ’ লাগবে।
আপাতত যা তদন্ত হয়েছে, তা থেকে উঠে এসেছে যে মুনমুনের সঙ্গে যাননি আরিয়ান এবং আরবাজ।
পাশাপাশি আরিয়ানের হোয়্যাটসঅ্যাপ চ্যাটেও কোনও ষড়যন্ত্রের প্রমাণ মেলেনি বলে জামিনের রায়ে জানায় হাইকোর্ট।
রায়ে আরও জানানো হয়েছে, শাহরুখ খানের পুত্রের ফোন থেকে হোয়্যাটসঅ্যাপ চ্যাট পাওয়া গিয়েছে, তা খুঁটিয়ে দেখার পর এমন কোনো প্রমাণ মেলেনি, যা থেকে ইঙ্গিত পাওযা যায় যে আরিয়ান এবং আরবাজ বা আরিয়ান, আরবাজ এবং মুনমুন বা অন্য অভিযুক্তদের সঙ্গে কোনও ষড়যন্ত্র তৈরি করা হয়েছিল। যেহেতু ষড়যন্ত্রের কোনো প্রমাণ মেলেনি, তাই ৩৭ ধারায় জামিনের কঠোর নিয়ম কার্যকর হবে না।