1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : বরিশাল ব্যুরো প্রধান : বরিশাল ব্যুরো প্রধান
  3. [email protected] : cmlbru :
  4. [email protected] : চট্রগ্রাম ব্যুরো প্রধান : চট্রগ্রাম ব্যুরো প্রধান
  5. [email protected] : ঢাকা ব্যুরো প্রধান : ঢাকা ব্যুরো প্রধান
  6. [email protected] : স্টাফ রিপোর্টারঃ : স্টাফ রিপোর্টারঃ
  7. [email protected] : ফরিদপুর ব্যুরো প্রধান : ফরিদপুর ব্যুরো প্রধান
  8. [email protected] : সম্রাট শাহ খুলনা ব্যুরো প্রধান : সম্রাট শাহ খুলনা ব্যুরো প্রধান
  9. [email protected] : ময়মনসিংহ ব্যুরো প্রধান : ময়মনসিংহ ব্যুরো প্রধান
  10. [email protected] : আমজাদ হোসেন রাজশাহী ব্যুরো প্রধান : রাজশাহী ব্যুরো প্রধান
  11. [email protected] : রংপুর ব্যুরো প্রধান : রংপুর ব্যুরো প্রধান
  12. [email protected] : রুবেল আহমেদ : রুবেল আহমেদ
মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:২৪ পূর্বাহ্ন

ধামরাইয়ের বাথুলি যুদ্ধ: আনন্দের আবহে বেদনার যে স্মৃতি

ডেস্ক রিপোর্ট দৈনিক শিরোমণিঃ
  • আপডেট : শুক্রবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০২১
ডেস্ক রিপোর্ট দৈনিক শিরোমণিঃ ১৪ ডিসেম্বর ১৯৭১। মুক্তিযোদ্ধাদের ধাওয়ায় মানিকগঞ্জ থেকে ধামরাই হয়ে ঢাকার দিকে পালাচ্ছিলো পাক হানাদাররা। ধামরাইয়ের জয়পুরা পর্যন্ত গিয়ে মুক্তিযোদ্ধারা দেখতে পান ভারতীয় মৈত্রী বাহিনীর বিমান থেকে গুলি ছোঁড়া হচ্ছে। এজন্যে মুক্ত করা এলাকার নিরাপত্তা নিশ্চিতে ফিরে আসছিলেন মুক্তিযোদ্ধারা। তখনই জানতে পারেন এক সহযোদ্ধা শহীদ হওয়ার খবর। দ্বিধায় পড়ে যান মুক্তিযোদ্ধারা। জানতে পারেন নিহতের শরীরে চেক শার্ট, চেক লুঙ্গি। ধারণা করেন সদ্য যোগ দেয়া বহিরাগত সাবেক সেনা কর্মকর্তাদের কেউ হয়তো মারা গেছেন। কিন্তু ফিরে এসে জানতে পারেন শহীদ অন্য কেউ নয় বরং তাদেরই সহযোদ্ধা বাথুলি যুদ্ধের অন্যতম নেতৃত্বদাতা আব্দুল ওহাব (শফি উদ্দিন)।এই প্রতিবেদকের কাছে মুক্তিযুদ্ধের শেষ দিনের সেই বর্ণনা দিয়েছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আজাহারুল ইসলাম আরজু। এসএসসি শেষ করে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। ১৫ ডিসেম্বর বাথুলি যুদ্ধের অন্যতম নেতৃত্ব দেয়া এই মুক্তিযোদ্ধা জানিয়েছেন আব্দুল ওহাব শফি উদ্দিনের শহীদ হওয়ার ঘটনা। বীর মুক্তিযোদ্ধা আজাহারুল ইসলাম আরজু বলেন, ১৯৭১-এর শুরু থেকেই আমরা পরিস্থিতি আঁচ করতে পারছিলাম। সে অনুযায়ী প্রস্তুতিও নিচ্ছিলাম। ২৫-শে মার্চের ঘটনার পর আমরা মানিকগঞ্জে প্রস্তুতি শুরু করি। সাবেক সেনা কর্মকর্তা ও ছুটিতে আসা অনেকেই আমাদের সঙ্গে যোগ দেয়। আমরা তাদের কাছ থেকেই অস্ত্র চালানো ও খুটিনাটি শিখে নেই। এদেরই একজন ছিলেন আব্দুল ওহাব (শফি উদ্দিন)। তিনি ইপিআরের সদস্য ছিলেন। মার্চে দুই মাসের ছুটিতে আসার পরেই যুদ্ধ শুরু হয়। পরে মানিকগঞ্জে এসে মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে যোগ দেন। স্থানীয় ছাত্র-যুবদেরকে রাইফেল চালানোসহ যুদ্ধের খুঁটিনাটি প্রশিক্ষণ দেয়া শুরু করেন। এছাড়াও নানা অপারেশনে যোগ দিতেন তিনি।’এরইমধ্যে ১৩ তারিখ থেকে পাকবাহিনী মানিকগঞ্জ থেকে বেরিয়ে যেতে শুরু করে। ১৩ তারিখ আমরা মানিকগঞ্জ শহরের দখল নেই। পরেরদিন ১৪ তারিখ সকালে জানতে পারি পাকবাহিনী আরিচা থেকে ঢাকা-আরিচা সড়ক ধরে বের হয়ে যাবে।এজন্য তাদেরকে প্রতিহত করতে আমরাও প্রস্তুত হই। আমরা ৩টি অংশ হয়ে অবস্থান নেই। বাথুলি নদীর পাশে একটি দল, নদী থেকে একশ গজ দূরে একটি দল আর বাথুলি ইটভাটার ওদিকে আরেকটি দল অবস্থান নেয়। এই দলে আমরা ছিলাম। আমাদের মধ্যে ও তাদের মধ্যে থেমে থেমে গোলাগুলি হচ্ছিলো। পাকবাহিনীর দলটি মূলত ছিলো ইঞ্জিনিয়ারিং আর্টিলারি। তারা কিছুটা ভাগ হয়ে একটি দল ঢুকে বাসস্ট্যান্ডের পাশ দিয়ে আরেকটা গ্রামের ভেতরের সড়ক দিয়ে। তখন আমরা গ্রামের পাশ দিয়ে অবস্থান নেই। আর আব্দুল ওহাব ভাই পড়ে যান মাঝামাঝি। তার গুলিতে দুইজন পাক হানাদার নিহত হয়।’তিনি আরো বলেন, আমরা ওভাবে ধাওয়া দিতে দিতে পাকবাহিনীর দলটিকে জয়পুরার দিকে নিয়ে যাই। তখনই দেখতে পাই ভারতের মৈত্রী বাহিনী বিমান থেকে গোলা ছুড়ছে। পরে বিকেলের আমরা ফিরে আসতে থাকি। এরমধ্যে এলাকাবাসী সবাই আমাদেরকে খাওয়ানোর জন্য অনেক জোরাজুরি করছিলো। কেউ কেউ মুড়ি, গুড়, তরকারি দিয়ে হাতে হাতে দিয়েও দিচ্ছিলো খাবার। সে এক আবেগঘন আনন্দের মুহুর্ত। সেই মুহুর্তেই জানতে পারি আমাদের একজন মুক্তিযোদ্ধা নিহত হয়েছেন। যার পরণে ছিলো চেক শার্ট ও লুঙ্গি। বিজয়ের কয়েকদিন আগে যশোর খুলনার দিককার ৩ জন সৈনিক আমাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছিলেন। তাদেরকে আমরা এমন জামাকাপড় পরতে দিয়েছিলাম। এজন শুরুতে ভেবেছি তাদের কেউই হয়তো শহীদ হয়েছেন।পরে যখন কাছাকাছি আসি, জানতে পারি আব্দুল ওহাব (শফি উদ্দিন) ভাই গুলিতে নিহত হয়েছেন। মরদেহ উদ্ধার করে তার বাড়ি মানিকগঞ্জের কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের বাহিরারচর মাঠে নেয়া হয়েছে। পরে সেখানেই গ্রামের কবরস্থানে তাকে সমাহিত করা হয়।এই বীর মুক্তিযোদ্ধা বলেন, ‘প্রায় সাড়ে ৯ মাস ধরে মাঠে থেকে পরিশ্রম করে মুক্তিযুদ্ধ সংগঠিত ও লড়াই করেছেন আব্দুল ওহাব (শফি উদ্দিন) ভাই। অথচ বিজয়ের মাত্র একদিন আগে তাকে আমরা হারালাম। এটা যে কি বেদনার। আমাদের মুক্তির আনন্দ যেনো অনেকটাই বেদনায় রুপ নিলো। মুক্ত বাতাসে শ্বাস নিতে পারলেন না আমাদের একজন ত্যাগী সহযোদ্ধা।জানতে চাইলে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল ওহাব (শফি উদ্দিন) এর ছেলে আব্দুল হালিম বলেন, সেনাবাহিনীতে আমার বাবা শফি উদ্দিনের পোস্টিং ছিলো পাকিস্তানে। মার্চে তিনি দুই মাসের ছুটিতে আসেন। পরে তো যুদ্ধ শুরু হয়। বাবা মানিকগঞ্জে হালিম কমান্ডারের সঙ্গে যুদ্ধে যোগ দেন। সেখানেই হালিম কমান্ডার তার নতুন নাম দেন আব্দুল ওহাব। পরে ১৪ ডিসেম্বর পাকবাহিনীর গুলিতে তিনি শহীদ হন। সেদিন মরদেহ আমাদের গ্রামে আনা হয়। পরেরদিন বারাহিরচর কবরস্থানে তাকে সমাহিত করা হয়। বাবার কোন স্মৃতি বা ছবি আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বাবা তো সেনাবাহিনীতে ছিলেন। তার পোস্টিং ছিলো পাকিস্তানে। ছুটিত  আসার সময় তিনি কিছুই আনেননি। এ কারণে তার কোন কাগজপত্র বা ছবি কিছুই আমাদের কাছে নেই।’মুক্তিযুদ্ধের পরে আব্দুল ওহাব (শফি উদ্দিন) নিহতের সেই ঘটনাস্থলে অস্থায়ী স্মৃতিসৌধ স্থাপন করেছিলেন মুক্তিযোদ্ধারা। গত ৫ বছর আগে সেই জায়গায় তার পরিবারের উদ্দোগে একটি স্মৃতিসৌধ স্থাপন করা হয়েছে। এখনো ১৫ ডিসেম্বর আসলে এই শহীদের কবরস্থানে ছুটে যান মুক্তিযোদ্ধারা। স্মরণ করেন একজন আত্মত্যাগীকে। তবে শহীদ হওয়ার জায়গাটি পড়ে থাকে অনেকটা অবহেলায় অযত্নে। স্থানীয় নতুন প্রজন্মের অনেকে জানেনই না এই শহীদের আত্মত্যাগের কথা।
Facebook Comments
৭ views

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো সংবাদ
© ২০২২ দৈনিক শিরোমনি