সারোয়ার হোসেন, তানোর প্রতিনিধি দৈনিক শিরোমণিঃ রাজশাহীর তানোরে একদিকে চলছে আলু পরিচর্যার কাজ অন্যদিকে বোরো বীজ তলা পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক শ্রমিক ও কৃষাণীরা।এছাড়াও প্রতিবারের মত এবারো অধিক লাভের আশায় অনেক কৃষক আগাম জাতের আলু চাষ করেছেন। ফলে আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় ফলন ভালো হবে বলে ধারনা চাষীদের। অপর দিকে বিলকুমারি সংলগ্ন যাদের জমি আছে তারা ইতিপূর্বেই বীজতলা তৈরী করে বীজ বপন করে পরিচর্যা করছেন ।এতে করে কৃষক শ্রমিকরা মাঠেই পার করছেন দিন রাত। দম ফেলার সময় নেই।কৃষকরা জানায়, আগাম জাতের আলু বেশির ভাগ চাষ হয় তানোর পৌর এলাকার জিওলগ্রামের নিচে রহিমা নামক ডাংগায়, ধানতৈড় ও গোকুল গ্রামের নিচে বা বিলের আংশিক জমিতে।এসব জায়গা উঁচু হওয়ার কারনে দ্রুত বিলের পানি নেমে যায়।আর পানি নামার সাথ সাথে শুরু করেন আলু রোপন।ওই আলুর গাছের পরিচর্যা চালিয়ে যাচ্ছেন। কারন অল্প সময়ের মধ্যেই উত্তোলন হবে এসব আলু। তানোর পৌর এলাকার জিওল গ্রামের আলু চাষি কাউন্সিলর মঞ্জুর রহমান জানান এবার ১ একর জমিতে আগাম জাতের আলু চাষ করেছি।শুরু থেকে এখন পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে আছে, উত্তোলনের সময় এমন আবহাওয়া থাকলে ফলন ও দাম পাওয়া যাবে বলে তিনিসহ অনেক চাষিরাই আশা প্রকাশ করছেন।এজন্য আগাম জাতের আলু পরিচর্যায় চরম ব্যস্ত চাষি থেকে শ্রমিকরা।এদিকে বিলকুমারি সংলগ্ন নিচু এলাকায় যারা আলু চাষ করেন না তারা আগাম বোরো রোপনের জন্য বীজ বপন করেছেন। অল্পদিনের মধ্যেই শুরু হবে ধান রোপনের কাজ বলে জানান কৃষকরা।বিশেষ করে চান্দুড়িয়া ব্রীজ ঘাট হয়ে তানোর পৌর এলাকার কালিগন্জ,হাবিব নগর,হলদারপাড়া বুরুজ, ভদ্রখন্ড,জিওল,আমশো, গুবিরপাড়া, কুঠিপাড়া,ধানতৈর,গোকুল,তালন্দ, ও কলমা ইউপির আজিজপুর, কুযিশহর এবং কামারগাঁ ইউপির, মাঝিপাড়া, বাতাসপুর,পারিশো,দুর্গাপুর, মাদারিপুর,মালশিরা।এসমস্ত এলাকায় কৃষকরা বোরো চাষের জন্য বীজতলা পরিচর্যা করতে দেখা যায়।।পৌর সদর এলাকার কৃষক এমাজ উদ্দিন জানান,বীজ ভালোই হয়েছে।অল্প দিনের মধ্যে ধান রোপনের কাজ শুরু হবে। আরেক কৃষক মফিজ জানান বিলের জমিতে বোরো ধান রোপনের জন্য বীজ প্রায় হয়েই গেছে।বীজও ভালো হয়েছে। তিনি আরো জানান বিলের নিচু জমিতে শুধু বোরো চাষ হয়।যার কারনে প্রাকৃতিক দুর্যোগ না থাকলে বাম্পার ফলন হয়।কিন্তু কথায় আছে বোরোর আশা না মরার আশা করা,হলেই ভালো না হলেই গেল। এদিকে উপজেলার চান্দুড়িয়া ইউপির রাতৈল,গাগরন্দ,কাঠালপাড়া,চান্দুড়িয়া,সরনজাই ইউপির কাসারদিঘি,মন্ডলপাড়া, ভাগনা,সিধাইড়, চককাজিজিয়া,সরকারপাড়া,শুকদেবপুর,তালন্দ ইউপির মোহর,লছিরামপুর,দেবিপুর,সালামপুর,লালপুর, আড়াদীঘি,বিলশহর,নারায়নপুর,কালনা।পাঁচন্দর ইউপির কৃষ্ণপুর,মোহাম্মাপুর,কচুয়া, যোগিশো, প্রানপুর,চিমনা,দুবইল,সাহাপুর,ইলামদহী,চাদপুর, বানিয়াল,বনকেশর, কলমা ইউপির আজিজপুর,মালবান্দা,নড়িয়াল,কলমা,বিল্লি,মারগাঁ, হাতিশাইল, ছাঔড়, হরিপুর,হাতিনান্দা,তানোর পৌর এলাকার,সিন্দুকাই,ধানতৈড়,চাপড়া,বেলপুকুরিয়া, তালন্দ,সুমাসপুর,হরিপুর, বাধাইড় ইউপি ও মুন্ডুমালা পৌর এলাকাতেই হয়েছে আলুর প্রজেক্ট। উপজেলার প্রায় সাড়ে ২২হাজার হেক্টরের আবাদি জমির মধ্যে প্রায় ১৪ হাজার হেক্টর জমিতে চাষ হয় আলু।এখন এসব মাঠ জুড়ে শুধু আলু পরিচর্যার কাজ চলছে ভরদমে। খোজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার জনসারনের প্রধান আয়ের উৎস হয়ে পড়েছে আলু চাষ।শুধু উপজেলার চাষীরাই না বিভিন্ন এলাকা থেকে লীজে জমি নিয়ে আলু চাষের বিশাল বিশাল প্রজেক্ট করেন মৌসুমি আলু চাষিরা।বিগত সময়ে আলু রোপনের সময় প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা দিলেও এবারের আবহাওয়া চাষের অনুকুলে থাকার কারনে সবকিছু দ্রুত হয়েছে। শ্রমিক মোস্তফা জানান এত দ্রুত আলু লাগানো হবে বুঝতেই পারলাম না।এখন সেচ ট্রপ ড্রেসিং এর কাজ চলছে। নিমিষেই ট্র্যাক্টরে জমি চাষ ও পাওয়ার টিলারে নাড়া কাটা হয়েছে খুবই দ্রত। যার কারনেই চোখের পলকেই শেষ হচ্ছে তাড়াতাড়ি। কৃষি কর্মকর্তা শামিমুল ইসলাম ইসলাম জানান,এবারের আবহাওয়া চাষাবাদের উপযোগী আছে। ১২ হাজার ৮৫০ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষমাত্রা নির্ধারন করা হলেও আরো বেশি চাষ হবে।বোরো বীজও ভালো রয়েছে। ২৮০ হেক্টর জমিতে বোরো বীজ হয়েছে। আর আগাম জাতের আলুর চাষ হয়েছে ১০০ হেক্টর জমিতে।
৩ views