স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, সঠিক সময়ে টিকা দেওয়ার ফলে দেশ এখন নিরাপদে আছে। মৃত্যুর সংখ্যা এক ডিজিটেই আছে। গতকাল এক শতাংশেরও নিচে এসেছে। এটি এত জনবহুল দেশে খুবই বিরল একটি বিষয়। সবার সহযোগিতায় আমরা কাজটি করে যাচ্ছি। প্রতিটি মানুষকেই যারা প্রাপ্য টিকা দেওয়া হবে। কেউই টিকার আওতার বাইরে থাকবে না।
আজ রবিবার (১৯ ডিসেম্বর) দুপুরে মহাখালী বিসিপিএস মিলনায়তনে বুস্টার ডোজের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এমপি এসব কথা বলেন। এ সময় তিনি আরো বলেন, ‘দেশে এই মুহূর্তে টিকার কোনো সংকট নেই। দেশের ৭০ শতাংশ মানুষকে টিকা দেওয়ার যে পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে- সে লক্ষ্য পূরণে আমাদের কাজ সঠিকভাবেই চলছে। দেশের সত্তর শতাংশ মানুষের জন্য হিসাব করলে ১২ কোটির কাছাকাছি মানুষকে আসছে বছরের এপ্রিলের মধ্যে টিকার আওতায় আনতে হবে।’
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, এরই মধ্যে দুই ডোজ মিলে প্রায় ১১ কোটির বেশি মানুষকে ভ্যাকসিনের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। এখন হাতে ভ্যাকসিন আছে ৪ কোটি ৬৩ লাখের মতো ডোজ। এ মাসে আরো দুই কোটি ডোজ ভ্যাকসিন আসবে।
তিনি আরো বলেন, নতুন বছরের শুরুর দিকে আরো ৯ কোটি ডোজ ভ্যাকসিন হাতে চলে আসবে। সুতরাং নতুন বছরের এপ্রিলের মধ্যেই আমাদের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে বলে আশা রাখা যায়। আর এখন যেহেতু বিশ্বব্যাপী ওমিক্রনের আতঙ্ক কাজ করছে। বুস্টার ডোজে ওমিক্রন অনেকটাই প্রতিরোধ হয় বলে জানা গেছে। এখন যেহেতু সরকারের হাতে পর্যাপ্ত ভ্যাকসিন মজুদও আছে, সে কারণে আমরা এখন থেকেই বুস্টার ডোজ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই ডোজ প্রথমে ষাটোর্ধ্ব বয়স্ক ব্যক্তি, কো-মর্বিডিটি আছে এমন ব্যক্তি এবং সেই সঙ্গে সব ফ্রন্ট লাইনারকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দেওয়া হবে।
বুস্টারের এই ডোজ গ্রহণকারীদের ফাইজারের টিকা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। মন্ত্রী জানান, আগে যেকোনো ডোজ নেওয়া ব্যক্তিরাই বুস্টার ডোজ হিসেবে ফাইজার টিকা নিতে পারবেন।
ভ্যাকসিন ডোজে দেশের সফলতা বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে গেছে। এখন অনেকের আগে বুস্টার ডোজের মাধ্যমে দেশে সুরক্ষা আরো মজবুত করা হচ্ছে বলেও জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী। মন্ত্রী বলেন, বুস্টার ডোজের কার্যক্রম শুরু করতে পারছি- এটা আরেকটি বড় অর্জন আমাদের। এর আগে আমরা অনেক দেশের আগেই দেশে টিকা কার্যক্রম শুরু করতে পেরেছি। ডাক্তার, নার্সসহ ফ্রন্টলাইনারদের টিকা দিতে পেরেছি।
সুরক্ষা অ্যাপে রেজিস্ট্রেশন করা প্রসঙ্গে জাহিদ মালেক বলেন, বুস্টার ডোজসংক্রান্ত সুরক্ষা অ্যাপের আপডেট কাজ এখনো সম্পন্ন হয়নি। তবে এই মুহূর্তে টিকা কার্ডের মাধ্যমে চলবে। একই সঙ্গে স্বাভাবিক টিকা কার্যক্রমও চলমান থাকবে।
অনুষ্ঠানে সবার আগে বুস্টার ডোজের টিকা নেন দেশে প্রথম টিকা নেওয়া কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স রুনু বেরুনিকা কস্তা। এরপর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ বি এম খুরশীদ আলম, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক, মৎস্য ও প্রাণিসম্পমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার, জাতীয় অধ্যাপক প্রফেসর ডা. শায়লা খাতুন এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক বুস্টার ডোজ টিকা নেন।