কমল তালুকদার,পাথরঘাটা (বরগুনা) প্রতিনিধি দৈনিক শিরোমণিঃ বৃহস্পতিবার ঢাকা থেকে বরগুনাগামী এমভি অভিযান-১০ নামক একটি লঞ্চ থেকে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে প্রাণে রক্ষা পান পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহি অফিসার হোসাইন আল মুজাহিদ সহ প্রায় ৫শতাধিক যাত্রী। ওই লঞ্চে পাথরঘাটা প্রেসক্লাবের সাংবাদিক, দৈনিক জনকন্ঠ প্রতিনিধি খোকন কর্মকারের সহধর্মিনী মাধবী কর্মকার,ছেলে শুভ কর্মকার,মেয়ে বৃষ্টি কর্মকার এবং ব্যবসায়ী হাজী শাহীন ও তার শাশুরী এবং তার মেয়ে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে প্রাণে রক্ষা পায় বলে জানা গেছে। এরিপোর্ট তৈরীকালে ৩৯টি অগ্নদগ্ধ মরদেহ উদ্ধারের খবর সংবাদমাধ্যমে জানানো হলেও বাকি যাত্রীদের ভাগ্যে কি আছে তা এখনো জানা সম্ভব হয়নি। বেচে যাওয়া যাত্রীরা জানিয়েছেন, লঞ্চের ইঞ্জিন থেকে এই ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত ঘটে। এ ঘটনায় অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছেন বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হোসাইন মোহাম্মদ আল মুজাহিদ। তিনি লঞ্চের ভিআইপি কেবিনের নীলগিরির যাত্রী ছিলেন। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় লঞ্চ থেকে লাফিয়ে বাঁচায় সময় তার স্ত্রী উম্মুল ওয়ারার ডান পা ভেঙে গেছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পাথরঘাটা উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তফা গোলাম কবির। বর্তমানে তারা ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ওই লঞ্চে বৃহস্পতিবার আরও যাত্রী হয়ে ওঠেন সাংবাদিক খোকনের স্ত্রী, পুত্র ও কন্যাসহ পাথরঘাটা ব্যবসায়ী হাজী শাহীনসহ আরও অন্তত দেড় শতাধিক যাত্রী।লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৩৯ জনের মরদেহ উদ্ধারের খবর পাওয়া গেছে। অগনিত যাত্রী আহত হওয়ার খবর চারদিক থেকে আসতেছে। অগ্নিকাণ্ডে দগ্ধ শতাধিক যাত্রীকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি নিয়ে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। তাদের মধ্যে অন্তত ৩০ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে। পাথরঘাটার ইউএনও হোসাইন মোহাম্মদ আল মুজাহিদ ঢাকা থেকে অফিশিয়াল কাজ সেরে বৃহস্পতিবার (২৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৬টায় লঞ্চে বরগুনা-ঢাকা নৌপথের এই লঞ্চযোগে পাথরঘাটা আসছিলেন বলে জানা গেছে।ঝালকাঠির কাছে সুগন্ধা নদীবক্ষে আসলে রাত ৩টার দিকে লঞ্চে অন্য যাত্রীদের চিৎকারে ঘুম ভাঙে ইউএনওসহ অন্যান্য যাত্রীদের। এ সময় লঞ্চটি নদীর মাঝখানে অবস্থান করছিল। অনেককেই নদীতে লাফিয়ে বাঁচার চেষ্টা করেন। গাঢ় ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন লঞ্চ থেকে অন্যান্যদের সঙ্গে ইউএনও দম্পতি লাফ দিলে তৃতীয় তলা থেকে দোতলায় পড়ে যান। তখন ইউএনও’র স্ত্রী উম্মুল ওয়ারার ডান পা ভেঙে যায়। পাথরঘাটা সহ অন্যান্য এলাকার লঞ্চে থাকা যাত্রীদের মধ্যে বৃদ্ধ এবং শিশুরাই বেশি হতাহত হন। এ ছাড়া লঞ্চে অনেক নারী ছিলেন যারা নদীতে লাফিয়ে পড়েছেন। অনেকের এখনও খোজ পাওয়া যায়নি। যাত্রীরা অনেকেই নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়ে সাঁতরে তীরে উঠতে পেরেছেন। কতজন তিরে উঠতে পারেননি তার সঠিক তথ্য জানা সম্ভব হয়নি।উদ্ধার হওয়া যাত্রীরা গণমাধ্যমকে জানান, রাত তিনটার দিকে লঞ্চের ইঞ্জিনরুম থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। পরে সে আগুন পুরো লঞ্চে ছড়িয়ে পড়ে। জীবন বাঁচাতে অনেক যাত্রী লঞ্চ থেকে ঝাঁপিয়ে পড়ে। এতে হতাহতের সংখ্যা বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। লঞ্চটিতে প্রায় পাঁচ থেকে ছয় শতাধিক যাত্রী ছিল বলেও জানান উদ্ধার হওয়ারা।পাথরঘাটার নিখোজদের সন্ধানে খোজখবর নিতে গণমাধ্যম কর্মীদের দৌড়ঝাঁপ করতে দেখা গেছে।
৬ views