ইশরাত মুহাম্মদ শাহ জাহান, মহেশখালী, কক্সবাজারঃ জ্বালানি অধিদপ্তর, ফায়ার সার্ভিসের লাইসেন্স, পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ছাড়াই শুধুমাত্র পৌরসভা কিংবা ইউনিয়ন পরিষদের ট্রেড লাইসেন্স দিয়েই চলছে গ্যাস সিলিন্ডার, অকটেন, পেট্রোল সহ জ্বালানি তেল বিক্রির হিড়িক। সরকারি নিয়মনীতি বহির্ভূতে কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলায় মুদির দোকান, ফার্মেসি,টেলিকম সেন্টার সহ ফুটপাতেও বিক্রি হচ্ছে পেট্রোলিয়াম (এলপি) গ্যাসের সিলিন্ডার সহ অকটেন, পেট্রোল নহ জ্বালানি তেল। এতে করে মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে সাধারণ মানুষ। ওষুধের দোকান, মুদি দোকান ও কাপড়ের দোকানেও চলছে গ্যাস সিলিন্ডার সহ অকটেন, পেট্রোল, ডিজেল বিক্রির হিড়িক।
সরেজমিনে মহেশখালী উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের হাট-বাজার ঘুরে এমনই চিত্রের দেখা মিলে। বিস্ফোরক পরিদপ্তরের ওয়েবসাইট সূত্রে জানা যায়, “সরকারি বিধি মোতাবেক গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রির জন্য কমপক্ষে পাকা মেঝেসহ আধা পাকা ঘর, ফায়ার সার্ভিসের অগ্নিনির্বাপক সক্ষমতা-সংক্রান্ত লাইসেন্সসহ অগ্নিনির্বাপক সিলিন্ডার এবং মজবুত ও ঝুঁকিমুক্ত সংরক্ষণাগার থাকতে হবে। একজন ব্যবসায়ী ওই সব শর্ত পূরণ করলেই কেবল এলপি গ্যাস বিক্রির নিবন্ধন পাওয়ার যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন। লাইসেন্স ছাড়া কোনও দোকানে এলপি গ্যাসের সিলিন্ডার বিক্রি করা যাবে না। ২০০৩ সালের দাহ্য পদার্থ সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী কোনও ব্যক্তি যদি লাইসেন্স না নিয়ে বিস্ফোরক দ্রব্যের ব্যবসা করে তবে তার তিন বছরের কারাদণ্ড ও অতিরিক্ত অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হওয়ার বিধান রয়েছে। প্রয়োজনে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সমস্ত মালামাল বাজেয়াপ্ত করা যাবে”।
কিন্ত এসব নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করে, আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে মহেশখালীর যত্রতত্র বিক্রি হচ্ছে এলপি গ্যাস সিলিন্ডার, অকটেন, পেট্রোল সহ জ্বালানি তেল। তবে নেই কোনো উপজেলা প্রশাসন কিংবা ফায়ার সার্ভিসের নজরদারি। নজরদারি না থাকার কারণে যত্রতত্র চলছে এলপি গ্যাসের সিলিন্ডার বিক্রি। ফলে সাধারণ মানুষ মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। কয়েকজন ক্রেতা বিক্রেতার সাথে কথা বলে জানা যায়, বাজারের বড় দোকান থেকে শুরু করে পাড়া মহল্লার দোকানেও মিলছে গ্যাস, পেট্রোল, অকটেন সহ জ্বালানি তেল। উপজেলা প্রশাসন কিংবা ফায়ার সার্ভিসের কোনো নজরদারি না থাকায় এ ঝুকিপূর্ণ ব্যবসা অনায়াসে চালিয়ে যাচ্ছে ব্যবসায়িরা। গ্যাস সিলিন্ডার অনেকটা বোমার মতো। গ্যাস বিক্রি করতে হলে অবশ্যই পৌরসভার ট্রেড লাইসেন্স, বিস্ফোরক লাইসেন্স ও অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রের ব্যবস্থা থাকতে হবে। তা না হলে গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি করতে পারবে না।
বিস্ফোরক লাইসেন্স ছাড়া এলপি গ্যাস সিলিন্ডার যারা বিক্রি করছে তাদের বিরুদ্ধে খুব দ্রুতই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি সচেতন মহলের। এবিষয়ে জানতে চাইলে মহেশখালী ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের স্টেশন অফিসার পূলক কান্তি সরকার মুঠোফোনে বলেন, আমরা অনেকবার বাজারে অভিযান পরিচালনা করেছি, এবং জনসচেতনতামূলক কার্যক্রমও প্রচার প্রচারণা করেছি। সবিশেষে প্রত্যক বাজার কমিটির সভাপতি সহ সংশ্লিষ্টদের চিঠিও দেয়া হয়েছে। আমাদের ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে চেষ্টার কমতি নেই। সামনে উপজেলা প্রশাসন সহ সংশ্লিষ্টদের সাথে নিয়ে বিভিন্ন মহড়া সহ সচেতনামূলক ক্যাম্পেইন করা হবে। বিষয় টি নিয়ে জানবার জন্য মহেশখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মোঃ সাইফুল ইসলামের সরকারি নাম্বারে একাধিকবার কল দিয়েও, রিসিভ না করায় তাঁর বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।