চাঁদপুর সদর উপজেলার রাজরাজেশ্বর চরে ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ সংরক্ষণে আবারও সাঁড়াশি অভিযান চালিয়েছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। শুক্রবার ভোররাত থেকে চাঁদপুরের পদ্মা ও মেঘনা নদীবেষ্টিত দুর্গম এ চরাঞ্চলের জেলে পল্লিতে এই অভিযান চালানো হয়।
অভিযানের খবর পেয়ে কয়েক হাজার জেলে তাদের জাল ও নৌকা ফেলে রেখে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। সাঁড়াশি এ অভিযানে ২৬৮টি মাছ ধরার নৌকা এবং প্রায় পাঁচ কোটি মিটার অবৈধ কারেন্ট জাল জব্দ করার পর তা পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়।
এদিন আকাশপথে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি হেলিকপ্টার এবং নদীতে লঞ্চ, স্পিডবোটসহ একাধিক নৌযান অভিযানে অংশ নেয়। যার নেতৃত্ব দেন নৌ-পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি মাহবুবুর রহমান। এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত ডিআইজি মোল্লা নজরুল ইসলাম, পুলিশ সুপার সফিকুল ইসলাম (অপারেশন), পুলিশ সুপার আকম আক্তারুজ্জামান বসুনিয়া, পুলিশ সুপার মাসুমা আক্তার, পুলিশ সুপার মিনা মাহমুদা, নৌ পুলিশ চাঁদপুর অঞ্চলের প্রধান পুলিশ সুপার ফরিদ আহমেদ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফরিদা পারভীন (মিডিয়া)সহ চাঁদপুর জেলা পুলিশ এবং মৎস্য বিভাগের কর্মকর্তাসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দুই শতাধিক সদস্য।
ভোর ৪টায় এই অভিযানে অংশ নেয়া সদস্যরা চাঁদপুর সদরের দুর্গম চর রাজরাজেশ্বর এবং পাশে মতলব উত্তরের বোরোরচর এলাকায় পেঁৗছে কয়েকশ’ মাছ ধরা নৌকা এবং জাল পুড়িয়ে ধ্বংস করে দেয়।
অভিযান শেষে পুলিশ সুপার সফিকুল ইসলাম গণমাধ্যমকে জানান, শুক্রবার একদিনে মাত্র আট ঘণ্টার অভিযানে ২৬৮টি মাছ ধরার নৌকা এবং প্রায় পাঁচ কোটি মিটার অবৈধ কারেন্ট জাল জব্দ করা হয়। পরে আগুনে পুড়িয়ে এসব ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে। আগামী দিনগুলোতেও এমন অভিযান অব্যাহত রাখা হবে।
উল্লেখ্য, গত ২৫ অক্টোবর সকাল ১০টা ২০ মিনিটের সময় রাজরাজেশ্বর ইউনিয়নের লক্ষ্মীরচর লাগোয়া শিলারচর নামক স্থানে মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানে গেলে নৌ-পুলিশের উচ্চ পর্যায়ের টহল টিমের উপর জেলে ও তাদের পরিবারের সদস্যরা হামলা চালায়। এ ঘটনায় ২০ জন পুলিশ আহত হয়। নৌ-পুলিশ বাদী হয়ে ৩৯ জনের নাম উল্লেখ পূর্বক ৫০০/৬০০ জনকে অজ্ঞাত আসামী করে চাঁদপুর সদর মডেল থানায় মামলা দায়ের করে। ওই ঘটনার পর পুলিশ পুনরায় সেখানে শুক্রবার ভোরে অভিযান পরিচালনা করেন।