রেদোয়ান হাসান সাভার,ঢাকা প্রতিনিধি দৈনিক শিরোমণিঃ সাভারে স্ত্রীকে হত্যার পর বড় ভাইকে ফোন করে লাশ নিতে বলা সেই চাঞ্চল্যকর বৃষ্টি হত্যার প্রধান আসামি আসাদুল’কে, নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা এলাকায় অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৪।৩১ জানুয়ারি দুপুরে গ্রেপ্তারের বিষয়টি র্যাব-৪ সিপিসি-২ এর কোম্পানি কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কমান্ডার রাকিব মাহমুদ খান নিশ্চিত করেন।এর আগে গত ৩০ জানুয়ারি ২০২২ তারিখ রাত থেকে ৩১ জানুয়ারি ২০২২ তারিখ সকাল ০৮.৩০ পর্যন্ত, র্যাব-৪ এর গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে, একটি চৌকস আভিযানিক দল, নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লা এলাকায় সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে, মোঃ আসাদুল ইসলামকে (২৬), গ্রেফতার করে।উল্লেখ্য ১৫ জানুয়ারি ২০২২ তারিখ দুপুরে আশুলিয়ার কাঠগড়া সরকারবাড়ী এলাকার একটি ভাড়া বাড়ির কক্ষ থেকে বৃষ্টি আক্তার নামের এক নারীর লাশ আশুলিয়া থানা পুলিশ উদ্ধার করে। এ সময় বিভিন্ন মিডিয়াসহ দৈনিক আজকের দর্পণে, “শ্বাসরোধে হত্যা করে লাশ নিতে স্ত্রীর বড় ভাইকে ফোন” শিরোনামে নিউজ প্রকাশিত হলে বিষয়টি ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।ঐদিন রাতেই আসাদুলসহ অজ্ঞাতনামা কয়েক জনকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের হয় আশুলিয়া থানায়।এর পরপরই র্যাব-৪ এর একটি গোয়েন্দা দল পুলিশের পাশাপাশি ছায়া তদন্ত শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় র্যারের গোয়েন্দা তথ্য ও স্থানীয় সোর্সের তথ্য অনুযায়ী নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে র্যাব-৪।র্যাব-৪ সিপিসি-২ এর কোম্পানি কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কমান্ডার রাকিব মাহমুদ খান বলেন গ্রেফতারকৃত আসামী’কে প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার বিবরণে জানা যায়, ভিকটিম মোছাঃ বৃষ্টি আক্তার (২৩) কিশোরগঞ্জের তাড়াইল থানাধীন এলাকার মেয়ে।
বৃষ্টির প্রথম স্বামীর সংসারে তার ০৬ বছর ও ০৪ বছরের দুই কন্যা সন্তান রয়েছে যারা তার বড় বোন আকলিমা’র কাছে থাকে। বৃষ্টি গাজীপুরে বোনের সাথে থেকে গার্মেন্টেসে চাকুরী করা কালে আসামী আসাদুলের সাথে পরিচয় হয়। গত ২০২০ সালে ১ লক্ষ টাকা যৌতুক নিয়ে আসামী আসাদ বৃষ্টির সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। বিয়ের পর তারা স্বামী-স্ত্রী গাজীপুর থেকে আশুলিয়ায় এসে একটি গার্মেন্টেসে চাকুরী নেয়। তাদের বেতন উত্তোলনের জন্য দুজনেই একটি মোবাইল ব্যবহার করত। বৃষ্টির প্রথম পক্ষের দুই সন্তানের খরচ প্রদান করতে আসাদের কাছে তার বেতনের অর্থ চাইলে আসাদ বৃষ্টি ও তার সন্তানদের কোন খরচ দিতে অস্বীকার করে। এছাড়াও আসামী আসাদ একাধিক পরনারীতে আসক্ত হওয়ার বিষয় জানতো বৃষ্টি। এ নিয়ে ১৩/০১/২০২২ তারিখ বৃহস্পতিবার রাত ১২.০০ টার দিকে বৃষ্টি ও আসাদের মাঝে ঝগড়া হয়। ঝগড়ার এক পর্যায়ে আসাদ বৃষ্টির গলা টিপে ও কাপড় দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। আসামী আসাদের বক্তব্য অনুযায়ী পরবর্তীতে বৃষ্টির মৃত্যু নিশ্চিত হতে ঘরের সিলিং ফ্যানের সাথে ঝুলিয়ে হত্যা সুনিশ্চিত করে। পরে ঘরে তালাবদ্ধ করে বৃষ্টির বড় ভাইকে ফোন করে মৃতদেহ নিয়ে যেতে বলে, তার মোবাইল বন্ধ করে দেয়। ঐদিন দুপুরে বৃষ্টির আপন ভাই ও খালাতো ভাই আশুলিয়ায় সরকার বাড়ীতে গিয়ে দরজায় তালাবদ্ধ পেয়ে আশুলিয়া থানায় খবর দিলে পুলিশ এসে ঘরের তালা ভেঙ্গে লাশ উদ্ধার করে। থানা পুলিশের সুরতহাল প্রতিবেদনে ভিকটিমে শরীরে বিভিন্ন আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়। র্যাবের এই কর্মকর্তা আরো বলেন জিজ্ঞাসাবাদে আসামী আসাদ বৃষ্টি হত্যার সাথে সরাসরি জড়িত মর্মে স্বীকারোক্তি প্রদান করেছে। গ্রেফতারকৃত আসামীকে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আশুলিয়া থানায় হস্তান্তর কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।