এজন্য কুন্ডু তপন কমিশনের সদস্যদের জেলার বারের এক নাম্বার ভবনের নিচতলায় অবস্থিত হলরুমে বসে মনোনয়নপত্র জমা নিতে দেখা যায়। এদিকে বৃহস্পতিবার পুনরায় বারের সামনে পুলিশ মোতায়েন করা হয়। পুলিশ সদস্যদের দেখা যায় বসে বসে অলস সময় কাটাতে।
অপরদিকে তিন দিন আইনজীবী সমিতি বন্ধ থাকার পর বুধবার বারের কর্মচারীরা ডিউটি করেছে। বেলা ১০টার দিকে বারের সদস্যরা উপস্থিত হয়ে বিক্রয় কেন্দ্রের তালা ভাঙেন। এরপর থেকে সেখানে বসে বারের কর্মচারীদের ওকালতনামা, বেলবন্ড, হাজিরা বিক্রি করতে দেখা যায়।
বারের সর্বশেষ কমিটির সাধারণ সম্পাদক এড. আ.ক.ম. রেজওয়ান উল্লাহ সবুজ এ প্রতিনিধিকে বলেন, মঙ্গলবার সিনিয়র আইনজীবীদের বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিক্রয় কেন্দ্রের তালা ভাঙা হয়। তিনি আরো বলেন, গত ২৭ জানুয়ারি বারের নির্বাচন কমিশন বাতিল করা হয় এবং নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়। ৩১ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত সাধারণ সভায় ঐ সিদ্ধান্ত অনুমোদন করা হয়। তিনি আরো বলেন, ১১ সদস্য বিশিষ্ঠ কার্যনির্বাহী কমিটির যারা পদত্যাগ করেছিলেন তার মধ্যে দু’জন প্রত্যাহার করেছে। এ কারনে কমিটি বহাল রয়েছে।
এদিকে ভারপ্রাপ্ত নির্বাচন কমিশনার এড. কুন্ডু তপন কুমার জানান পূর্ব ঘোষিত নির্বাচনী তপশীল অনুযায়ী বুধবার বিকাল ৪টা পর্যন্ত ১১টি পদের বিপরীতে ১৫টি মনোনয়ন জমা হয়েছে। মনোনয়নপত্র জমা প্রদানকারীরা হলেন সভাপতি পদে সাবেক সভাপতি এড. শাহ আলম এবং এড. রবিউল ইসলাম খান, সহ-সভাপতি পদে এড. আব্দুস সামাদ, সাধারণ সম্পাদক পদে সাবেক সাধারণ সম্পাদক এড. তোজাম্মেল হোসেন তোজাম এবং এড. শেখ এমদাদুল ইসলাম, যুগ্ম সম্পাদক পদে এড. মো: সাইদুর রহমান ও এড. মো: কামরুজ্জামান ভুট্টো, কোষাধ্যক্ষ পদে এড. আমিনুর রহমান চঞ্চল, সহকারী সম্পাদক (ক্রীড়া ও সংস্কৃতি বিষয়ক) পদে এড. সিরাজুল ইসলাম-৫ ও এড সানজিদা খাতুন, সহ-সম্পাদিকা (মহিলা বিষয়ক) পদে এড. মোছা: ফারজানা জাহান (টুকটুকি), সহ-সম্পাদক (লাইব্রেরী বিষয়ক) আ, ক, ম, শামসুজ্জোহা (খোকন) এবং সদস্য যথাক্রমে এড. রফিকুল ইসলাম (রফিক), এড.সাহেদুজ্জামান সাহেদ, সাঈদুজ্জামান জিকো।
ভারপ্রাপ্ত নির্বাচন কমিশনার এড, কুন্ডু তপন কুমার জানান, সাতক্ষীরা জেলা আইনজীবী সমিতির কার্যকরি কমিটির ১১ সদস্যের মধ্যে আটজন পদত্যাগ করায় গঠণতন্ত্র অনুযায়ি ওই কমিটি ভেঙে দেওয়া হয়। অথচ সাবেক কমিটির সভাপতি এড. আবুল হোসেন (২) ও সাধারণ সম্পাদক রেজোয়ান উল্লাহ সবুজ এক সভা ডেকে গঠণতন্ত্র বহির্ভুতভাবে ৩১ জানুয়ারি মনগড়া কমিটি গঠণ করে নির্বাচন কমিশনার হিসেবে প্রবীন আইনজীবী এসএম হায়দারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। আইনজীবী সমিতির সদস্য এড. আমিনুর রহমান চঞ্চল বাদি হয়ে অবৈধ নির্বাচন কমিশনারসহ সাতজনের বিরুদ্ধে সাতক্ষীরা সদর সিনিয়র সহকারি জজ আদালতে মামলা দায়ের করেন। মামলায় ওই অবৈধ কমিটির কার্যত্রমের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা চাওয়া হয়। ভারপ্রাপ্ত বিচারক যুগ্ম জজ প্রথম আদালতের বিচারক বিবাদীদের দু’দিনের মধ্যে কারণ দর্শাণোর নির্দেশ দেন।
এড. কুন্ডু তপন কুমার আরো জানান, ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি আইনজীবী সমিতির নির্বাচন সম্পর্কিত তপশীল ঘোষণা করা হয়। সে অনুযায়ি ৯ ফেব্রুয়ারী মনোনয়ন জমা দেওয়ার ধার্য দিন ছিলো। বুধবার দুপুর ১২টার দিকে তার অফিসের তালা ভেঙে নির্বাচন কার্যালয় দখল করে নেন। বাধ্য হয়ে তিনি পুলিশকে অবহিত করে বিকেল চারটা পর্যন্ত আইনজীবী সমিতির নীচে মনোনয়নপত্র জমা নেন।
বৃহস্পতিবার দুপুরেের দিকে নির্বাচনী কার্যালয়ে যেয়ে দেখা গেছে দরজার তালা ভাঙা। ভিতরে বসে আছেন এড. এসএম হায়দার, এড. শাহানাজ পারিভন মিলি, এড. নিজামউদ্দিন, এড. সেলিনা আক্তার শেলী ও এড. মিজানুরি রহমান বাপ্পি।
এব্যাপারে এড. শাহানাজ পারভিন মিলি বলেন, ২৭ জানুয়ারির নিয়ম বহির্ভুতভাবে কমিটি ভেঙে দেওয়ার পর এড. কুন্ডু তপন যেভাবে নির্বাচন কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন তা সঠিক নয়। তাই তারা নবগঠিত নির্বাচন কমিশনারের পক্ষে ওই ঘর দখলে নিয়েছেন।
এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গোলাম কবীর জানান, অভিযোগ পেয়ে আইনজীবী সমিতিতে পুলিশ পাঠানো হয়।