কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারটি আমাদের জন্য খুবই দুঃখ ও কষ্টজনক। আমরা দুঃখিত। এই বিচারটি শেষ করা উচিত। এ মামলার চার্জশিট দিয়ে বিচার প্রক্রিয়া শেষ করবে এই আশা আমি ব্যক্ত করছি। আমাদের এটি একটি ব্যর্থতা।
টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের নতুন কার্যনির্বাহী পরিষদের পরিচিতি অনুষ্ঠান ও টাঙ্গাইল-৭ আসনের সংসদ সদস্য খান আহমেদ শুভর সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে শুক্রবার রাতে মন্ত্রী এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, এ মামলার চার্জশিট দিয়ে বিচার প্রক্রিয়া শেষ করবে এই আশা আমি ব্যক্ত করছি। আমাদের উচিত হবে আইন বিভাগ, আইন মন্ত্রণালয় ও বিচার বিভাগের যারা দায়িত্বে রয়েছে, তাদেরও দায়িত্ব হবে দ্রুত বিচারটি শেষ করা।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, বিএনপি নির্বাচন কমিশন নিয়ে সেই আগের মতোই বলছে। তারা নির্বাচন করবে না, সুষ্ঠ নির্বাচন হবে না, নানা রকম তিরস্কারমূলক এবং কটু মন্তব্য করছেন। তাদের একই কথা বারবার ঘুরিয়ে বলছে। তাদের মূল কথাটি হচ্ছে বাংলাদেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না। আমিও তাদের বলতে চাই বাংলাদেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নেতৃত্বে আর কোনো নির্বাচন হবে না। পৃথিবীর কোনো দেশেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নেতৃত্বে নির্বাচন হয় না। যারা ক্ষমতায় থাকে তাদের নেতৃত্বেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। কাজেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নেতৃত্বে নির্বাচন হবে না। জাপানেও হয় না, ভারতে হয় না, নিউজিল্যান্ডে হয় না এবং কি কানাডাতেও হয় না। পৃথিবীর কোনো গণতান্ত্রিক দেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নেতৃত্বে নির্বাচন হয় না।
তিনি বলেন, বিএনপি নির্বাচনে না এসে ২০১৪ সালে ভুল করেছিল। তারা সন্ত্রাসের পথে গিয়েছিল। দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য তারা অনেক পদক্ষেপ নিয়েছে। তারা গাড়ি পুড়িয়েছে, রেল লাইন তুলে দিয়েছে, বিদ্যুতের লাইন কেটেছে, স্কুল কলেজে আগুন দিয়েছে, জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করেছে। ২০১৫ সালে ৯০ দিন টানা হরতাল করেছে। একইভাবে ১৫০ জন মানুষকে অগ্নিদ্বগ্ধ করেছে। এখনো অনেক মানুষ আগুনের পোড়া নিয়ে নানারকম ভোগান্তি পোহাচ্ছে। জীবন যুদ্ধে তারা লড়াই করছে। এই যে বর্বরতা ও পৈচাশিকতা এটা কোন দিন জাতি মেনে নিবে না। এর জন্য বিএনপিকে অনেক মূল্য দিতে হয়েছে। আবার যদি তারা নির্বাচন বানচালের নামে সন্ত্রাসের পথ বেছে নেয় একই পরিণতি তাদের হবে।
নির্বাচন কমিশনের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব হচ্ছে সুষ্ঠ নির্বাচন করা। এটা সরকারের কোন দায়িত্ব নয়। নির্বাচনকালীন সময়ে যে সরকার থাকবে, তাদের তেমন কোন ক্ষমতা থাকবে না। তবে ক্ষমতা থাকবে নির্বাচন কমিশনের। আমাদের সংবিধানের ১২৬ ধারা সুস্পষ্টভাবে লেখা রয়েছে সকল নির্বাহী সশস্ত্র বাহিনী, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, এমপিদের দায়িত্ব হবে নির্বাচন কমিশনকে সহায়তা করা। এটি যদি কেউ না করে তার উপর যেকোন ব্যবস্থা নির্বাচন কমিশন নিতে পারবে। নির্বাচন কমিশনের স্বাধীনতার জন্য অনেক ক্ষমতা সংবিধানে তাদের দেয়া হয়েছে। তাদেরকে বাজেট আলাদা করে দেয়া হয়েছে। তারা কোন ক্রমেই সরকারের উপর নির্ভরশীল নয়। নির্বাচন কমিশন আগামী নির্বাচনও সুষ্ঠ সুন্দর নির্বাচন জাতিকে উপহার দিবে।
প্রেসক্লাবের বঙ্গবন্ধু ভিআইপি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীরমুক্তিযোদ্ধা ফজলুর রহমান খান ফারুক, সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা জোয়াহেরুল ইসলাম (ভিপি জোয়াহের) এমপি, সহ-সভাপতি মো. ছানোয়ার হোসেন এমপি, তানভীর হাসান ছোট মনির এমপি, জেলা প্রশাসক ড. মো. আতাউল গনি, পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার, টাঙ্গাইল পৌরসভার মেয়র এসএম সিরাজুল হক আলমগীর, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহজাহান আনছারী।
টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের সভাপতি জাফর আহমেদের সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য রাখেন টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক কাজী জাকেরুল মওলা।