নজরুল ইসলাম নরসিংদী প্রতিনিধি দৈনিক শিরোমণিঃ নরসিংদীতে পিতার অভিযোগের ভিত্তিতে ময়নাতদন্তের জন্য মৃত্যুর ২২ দিন পর সাফাত সালমান নূর নামে ১ বছর ৩ মাস বয়সী এক শিশুর লাশ উত্তোলন করেছে পুলিশ।বৃহস্পতিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) বিকাল চারটার দিকে নরসিংদীর ভূমি অধিগ্রহণ শাখা ও জে এম শাখার সিনিয়র সহকারী কমিশনার শ্যামল চন্দ্র বসাক উপস্থিতিতে নরসিংদীর মাধবদী থানাধীন বৈলাইন এলাকা থেকে নিহতের পিতার অভিযোগের ভিত্তিতে এ লাশ উত্তোলন করে রূপগঞ্জ থানা পুলিশ।এ ব্যাপারে নিহতের পিতা শাহাদাত হোসেন গত ১৭ ফেব্রুয়ারি নিহত শিশুর মা বৃষ্টি আক্তারকে (২২) আসামি করে রূপগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে সেই অভিযোগের ভিত্তিতে নিহত শিশুর লাশ উত্তোলন করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের মা বৃষ্টি আক্তারকে আটক করেছে পুলিশ।নিহতের পিতার অভিযোগের ভিত্তিতে জানা যায়, মাধবদী থানাধীন বৈলাইন এলাকার মো. নবাব উদ্দিনের ছেলে মো. শাহাদাত হোসেনের সহিত রূপগঞ্জের চারিতাল্লুক চৌধুরীবাড়ি এলাকার শফিকুল ইসলামের মেয়ে বৃষ্টি আক্তারের (২২) প্রেম করে বিয়ে হয়। বিয়ের পর বিগত ১ বছর ৩ মাস পূর্বে তাদের কোল আলোকিত করে সাফাত সালমান নূর নামে এক পুত্র সন্তান জন্ম গ্রহণ করে। তারপর থেকে বৃষ্টি আক্তারের পিতা মাতা নাতিসহ মেয়ে ও মেয়ের জামাইকে মেনে নেয়।বিগত কিছুদিন পূর্বে মোবাইল ফোনে পরিচয়ের সূত্র ধরে বৃষ্টি আক্তার অজ্ঞাত এক যুবকের প্রেমে পড়ে এবং গত ৬ জানুয়ারি কাউকে কিছু না বলে শিশু সন্তানসহ স্বামীর বাড়ি থেকে চলে যায়। পরবর্তীতে খোঁজ করে সে বাবার বাড়িতে আছে জানতে পেরে তার স্বামী তাকে আনতে গেলে সে আসবেনা বলে সাফ জানিয়ে দেয়।এতে রাগ করে তার স্বামী চলে আসে। বৃষ্টি তার স্বামী শাহাদাতের সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। পরে গত ২ ফেব্রুয়ারি বেলা অনুমান ৩টার দিকে শাহাদাত মোবাইল ফোনে তার শ্বশুরবাড়িতে তার সন্তানের মৃত্যুর সংবাদ পায়। সংবাদ পেয়ে তাৎক্ষনিকভাবে শাহাদাত, তার মা রোকসানা বেগম, চাচা আ. আজিজ, আ. মজিদ, শাহিন,ভাই কিরনসহ অন্যান্য লোকজনসহ তার শ্বশুর বাড়িতে গিয়ে তার ছেলেকে মৃত অবস্থায় দেখে।এ সময় ছেলের মুখ দিয়ে ফেনা বের হতে দেখেও কাউকে কোনোরকম সন্দেহ ছাড়াই ছেলের লাশ নিজ বাড়িতে এনে দাফন করে। পরে গত ৮ ফেব্রুয়ারি বেলা অনুমান ১১টার দিকে শাহাদাত তার শ্বশুর বাড়িতে গিয়ে তার স্ত্রীর ব্যবহৃত ফোনের ম্যাসেঞ্জারে কথিত প্রেমিকের সাথে তার ছেলেকে হত্যার পরিকল্পনা জানতে পারলে স্ত্রী বৃষ্টি আক্তার তা দেখে ফেলে এবং জোড়াজুড়ি করে মোবাইল ফোন নিয়ে কথোপকথনের কিছু রেকর্ড মুছে ফেলে। পরে শাহাদাত পুনরায় মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয় এবং গত তারিখে রূপগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করে।এরই প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার নিহত শিশু সাফাত সালমান নূর এর লাশ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এর উপস্থিতিতে উত্তোলন করে রূপগঞ্জ থানা পুলিশ।
৮ views