ইবি প্রতিনিধি : বেতন স্কেল বৃদ্ধি, চাকরির বয়সসীমা বাড়ানোসহ তিন দফা দাবিতে লাগাতার আন্দোলন করছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তারা। সপ্তম দিনের মতো গতকাল শনিবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত কর্মবিরতি পালন করেন তারা। তাদের দিনভর এই কর্মবিরতিতে ভোগান্তিতে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা৷ সনদপত্র, সার্টিফিকেট উত্তোলন, প্রবেশপত্র গ্রহণসহ নানান কাজে কর্মকর্তাদের অফিসে গিয়ে তাদের না পেয়ে ক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীরা।
জানা যায়, ২০১৬ সাল থেকে সহকারী রেজিস্ট্রার বা সমমান পদে প্রারম্ভিক বতেন স্কেল ৩৫,৫০০-৬৭,০১০ টাকা, উপ-রেজিস্ট্রার বা সমমান পদে বেতন স্কেল ৫০,০০০-৭১,২০০ টাকা, চাকুরীর বয়সসীমা ৬২ বছরকরণ এবং কর্মঘন্টা ঠিক রেখে দুইদিনের পরিবর্তে একদিন (পূর্বের ন্যায়) অফিস ছুটি নির্ধারণের দাবিতে আন্দোলন করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা সমিতি। সর্বশেষ গত ৭ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত ২৫৪তম সিন্ডিকেট সভার কর্মকর্তাদের দাবিসমূহ না মেনে নেয়ায় ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে ফের আন্দোলনে নামেন তারা৷ এ উপলক্ষে প্রতিদিন কর্মবিরতি করে যাচ্ছেন তারা।
গতকাল শনিবার প্রশাসন ভবনের সামনে সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত কর্মবিরতি পালন করেন কর্মকর্তারা৷ এসময় সমিতির সভাপতি এটিএম এমদাদুল আলমের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক ওয়ালিদ হাসান মুকুটের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে বিভিন্ন দফতরের কর্মকর্তারা বক্তব্য রাখেন। বক্তব্যে তারা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমাদের দাবি জানিয়ে আসছি। কিন্তু প্রশাসনের পক্ষ থেকে তা মেনে নেয়া হচ্ছে না৷ এছাড়া একাধিকবার দাবিসমূহ বাস্তবায়নের আশ্বাস দিলেও তা বাস্তবায়ন করা হয়নি। দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তারা উল্লেখিত এই সুবিধাসমূহ ভোগ করে আসছেন৷ আমরা কেন এসব থেকে বঞ্চিত হবো? এসময় দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার হুশিয়ারী দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তারা৷
এদিকে কর্মকর্তাদের লাগাতার এই কর্মবিরতিতে ভোগান্তিতে পড়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা৷ প্রশাসনিক বিভিন্ন কাজে এসে কর্মকর্তাদের না পেয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রীয়া ব্যক্ত করেছেন শিক্ষার্থীরা।
আসিফ আকবর নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, সার্টিফিকেট উত্তোলন করতে কয়েকদিন ধরে ঘুরছি, কিন্তু অফিসে লোকজন পাচ্ছি না। এদিকে তাদের দেখা পেলেও তারা পরে আসতে বলছেন বারবার৷ আন্দোলনের নামে এরকম অফিস বিরতি দেয়া ভোগান্তি ছাড়া কিছুই নয়।
এদিকে ট্যুরিজম এন্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের একজন শিক্ষার্থী জানান, প্রবেশপত্রের জন্য দুইদিন কর্মকর্তাদের অফিসে গিয়েছি৷ কিন্তু তাদের পাইনি৷ একবার দেখা হওয়ার পর বললো ‘কাজ হয়নি দেরি হবে’! এখন প্রবেশপত্র ছাড়া পরীক্ষার হলে গেলে যদি ঢুকতে না দেয় তাহলে কি করবো?
এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম বলেন, অর্থিক বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে গেলে আইনের বাহিরে আমি যেতে পারবো না। তাদের দাবিসমূহ নিয়ে আমি ইউজিসির সাথে কথা বলবো। যৌক্তিক হলে আমিও চাই তাদের দাবি পূরণ হোক।