শুধু ঢাকা নয় এখন সারা দেশেই ছায়ানটের আদলে গানের আয়োজন এবং মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়। আজ সরকারি ছুটি। বাংলা নববর্ষ ১৪২৯ উদ্যাপনে রাজধানী এবং দেশ জুড়ে থাকবে বর্ষবরণের নানা আয়োজন। ‘বাংলা নববর্ষ ১৪২৯’ জাঁকজমকপূর্ণভাবে উদযাপনের লক্ষ্যে জাতীয় পর্যায়ে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে সরকার। এদিন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও বাংলা একাডেমির উদ্যোগে বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকায় ক্রোড়পত্র প্রকাশ করা হবে। বাংলা নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে দেশের সব জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়নে বৈশাখী শোভাযাত্রার আয়োজন করা হবে। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করেছে। বাংলা একাডেমি সকাল ৮টায় নববর্ষ বক্তৃতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে, বাংলা একাডেমি এবং বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) কর্তৃক বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে এবং বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন প্রাঙ্গণে নববর্ষ মেলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করেছে। এদিকে, বেলা ২টার মধ্যে শাহবাগ বৈশাখের সব অনুষ্ঠান শেষ করার নির্দেশনা দিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ।
বাংলা বর্ষের প্রচলন : মূলত ১৫৫৬ সালে কার্যকর হওয়া বাংলা সন প্রথম দিকে পরিচিত ছিল ফসলি সন নামে, পরে তা পরিচিত হয় বঙ্গাব্দ নামে। রাজস্ব আদায়ের সুবিধার জন্য সম্রাট আকবরের যুগে বৈশাখ থেকে প্রবর্তন হয়েছিল বাংলা সালের। বর্ষ শুরুর সেই দিনটিই এখন বাঙালির প্রাণের উত্সব। বাদশাহ আকবরের নবরত্ন সভার আমির ফতেহ উল্লাহ সিরাজি বাদশাহি খাজনা আদায়ের সুবিধার জন্য ফসলি সালের শুরু করেছিলেন হিজরি চান্দ্রবর্ষকে বাংলা সালের সঙ্গে সমন্বয় সাধন করেছিলেন ও পয়লা বৈশাখ থেকে বাংলা নববর্ষ গণনা শুরু করেছিলেন। আর বৈশাখ নামটি নেওয়া হয়েছিল নক্ষত্র ‘বিশাখা’র নাম থেকে। বিশাখা থেকে নাম হলো বৈশাখ। পয়লা বৈশাখের দিনে উত্সবের শুরুটাও সেই আকবর আমলেই। এ দিনে তিনি মিলিত হতেন প্রজাদের সঙ্গে। সবার শুভ কামনা করে চারদিকে বিতরণ করা হতো মিষ্টি। এরপর ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি আমলে বর্ষবরণ উত্সব চলে আসে জমিদারবাড়ির আঙিনায়। খাজনা আদায়ের মতো একটি রসহীন বিষয়ের সঙ্গে যুক্ত হয় গান বাজনা, মেলা আর হালখাতার অনুষ্ঠান। আজ আর খাজনা আদায় নেই। তবে ‘হালখাতা’ রয়েছে। দেশের ব্যবসায়ী মহলে ‘হালখাতা’ অনুষ্ঠান মানে নতুন অর্থবছরের হিসাব খোলা। নতুন বছরের প্রথম দিনটিতে নতুন একটি ‘লাল কভারের’ খাতায় হিসাব খুলে নতুন উদ্যমে শুরু করা হয় ব্যবসা। সেখানে অতীতের ভুল ভ্রান্িতগুলো পর্যালোচনা করা হয়। হালখাতা থেকে নেওয়া হয় নতুন পরিকল্পনা ও কর্মসূচি।