সেলিম খান, সাতক্ষীরা জেলা প্রতিনিধি ঃ সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বাঁশতলা গ্রামের একটি মসজিদে ঢুকে নামাজে বাঁধা দেওয়ার অভিযোগে অশোক সরদার নামের হিন্দু সম্প্রদায়ের এক যুবককে আটক করা হয়েছে। শনিবার দুপুরে তাকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। এর আগে শুক্রবার ভোর রাত ভোর ২টার দিকে মসজিদ এলাকা থেকে পুলিশ তাকে আটক করে।
আটককৃত অশোক সরদার (৪২) সদর উপজেলার শিবপুর ইউনিয়নের বাঁশতলা গ্রামের বিজবার সরদারের ছেলে।
বারপোতা মসজিদের ঈমাম মাওলানা মোহাম্মদ আবু সাঈদ জানান, মুসল্লিরা ইফতার শেষে তার ইমামতিত্বে মাগরিবের নামাজ আদায় করছিলেন। দ্বিতীয় রাকাতে নামাজরত থাকা অবস্থায় একজন হিন্দু সম্প্রদায়ের যুবক সামনে গিয়ে আমার দুই হাত ধরে টেনে তোলেন। এরপর বলতে থাকেন, তোমাদের আর সময় নাই। এরপর তিনি ‘হরে রাম, হরে কৃষ্ণ’ গাইতে থাকেন।
মসজিদে নামাজ আদায়কারী তেঁতুলতলা গ্রামের মোস্তফা গাইনের ছেলে রিয়াসাদ আলম জানান, আমরা ইফতারি শেষ করে নামাজ শুরু করি। ফরজ নামাজের দুই রাকাত তখন শেষ পর্যায়ে। মসজিদে থাকা প্রায় শতাধিক মুসল্লি সবাই নামাজের মনোযোগী ছিলেন। এমন মুহূর্তে একজন হিন্দু যুবক পাঁচ কাতার পেছন থেকে সামনে চলে যায়। সেখানে গিয়ে ঈমামের হাত টেনে ধরে তুলে বলে, তোমাদের দিন শেষ, আমাদের দিন শুরু, হরে কৃষ্ণ হরে রাম।
রিয়াসাদ আলম আরও বলেন, মসজিদের উত্তর পাশে একটি মন্দির রয়েছে। সেখানে পহেলা বৈশাখ উপলক্ষ্যে পূজা চলছে। পূজার ওই অনুষ্ঠাণে ৫০০-৬০০ মানুষ ছিলেন। যুবকের ওই আচরণে মসজিদের ঈমামসহ মুসল্লিদের মাঝে তখন আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
শিবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ বলেন, নামাজের সময় ওই যুবক বাঁধা দেয়। এরপর তাকে পুলিশে দিয়েছে মুসল্লিরা।
তবে অশোক সরদারের দাদা পরিতোষ সরদার জানান, আমরা তো হিন্দু-মুসলমান সপ্রীতি নিয়ে বসবাস করতে চাই। অশোক যে কেন এমন করল তা বুঝতেছিনা। তবে ইদানিং অশোকের ভিতরে অস্বাভাবিক কিছু আচরণ তিনি লক্ষ্য করেছেন।
সাতক্ষীরা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) গোলাম কবির জানান, ঘটনা শুনে তিনি ও সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মীর আসাদুজ্জামান ঘটনাস্থলে যান। স্থানীয়দের নিয়ে বৈঠকে বসেন। পরবর্তীতে ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাত হানার দায়ে হিন্দু যুবক অশোক সরদারকে আটক করা হয়।
তিনি আরো জানান, শনিবার দুপুরে মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসেন বাদি হয়ে ২৯৫ ও ২৯৮ ধারায় তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। পরে তাকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়।