করোনার টিকা নিয়ে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) গবেষণা প্রতিবেদনের বিষয়ে সংস্থাটির বিরুদ্ধে প্রয়োজনে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। বৃহস্পতিবার (২৮ এপ্রিল) দুপুরে সচিবালয়ে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সরকার যেখানে ২০ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় করেছে, তারা এখানে উল্টোটা বলছে। এদের বিরুদ্ধে তো আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। আমি স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সাথে কথা বলেছি, প্রয়োজনে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং লিগ্যাল নোটিশ প্রয়োজনে দেওয়া হবে।’
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘সরকার অনেক টিকা ক্রয় করেছে। এটা নিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বিস্তারিত জানিয়েছেন। টিকা কিনতে সরকার ১৭ হাজার কোটি টাকা খরচ করেছে। সেগুলো আবার ডিস্ট্রিবিউশন, প্রিজার্ভেশন, টিকাগুলো মানুষকে পুশ করা বাবদ আরও ৩ হাজার কোটি টাকা খরচ হয়েছে। অর্থাৎ ২০ হাজার কোটি টাকা এভাবে খরচ হয়েছে, সরকার যে টিকাগুলো কিনেছে সেগুলো বাবদ।’
‘সরকার সাড়ে ৯ কোটি ডোজ টিকা বিনামূল্যে বিভিন্ন সূত্র থেকে সংগ্রহ করেছে। সেগুলোর যদি মূল্য ধরা হয়, এগুলোর প্রতিটির মূল্য ২৫ থেকে ৩০ ডলার। সেগুলোর মূল্য ধরা হলে তা আরও প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা। স্বাস্থ্যমন্ত্রী এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, আমরা ৪০ হাজার কোটি টাকার টিকা দিয়েছি। এই পুরো টিকাই কিন্তু বিনামূল্যে প্রত্যেকটি মানুষকে দেওয়া হয়েছে। পৃথিবীর উন্নত দেশগুলোও কিন্তু বিনামূল্যে দেয়নি। সেখানে পয়সা দিয়ে টিকা নিতে হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘বিনামূল্যে টিকা সংগ্রহ করার কারণে সরকার প্রকৃতপক্ষে রাষ্ট্রের ২০ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় করেছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সেই কথা ধরে টিআইবি একটি স্টেটমেন্ট দিলো যে, সরকার এ খাতে এতো হাজার কোটি টাকা বেহাত করেছে। অথচ ইনসাইটে ঢোকেনি। সেই স্টেটমেন্টে আপনারা দেখেছেন, বাংলাদেশে মৃত্যুর হার হচ্ছে দেড় পার্সেন্ট আর টিআইবি বলছে ৭ পার্সেন্ট। কি রকম একটি অপেশাদার এবং ভেতরে না ঢুকে, তড়িঘড়ি করে বিবৃতি দেয়। তারা বলছে গবেষণা প্রতিবেদন। আসলে যে কোনো গবেষণা করে না। তড়িঘড়ি করে দেশকে দোষী করার জন্য তারা যে মনগড়া তথ্য দেয় এটিই তার প্রমাণ।’
বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভীর সমালোচনা করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘টিআইবির কথার সূত্র ধরে গতকাল রুহুল কবির রিজভী বক্তব্য দিয়েছেন। টিআইবি তো পারপাসফুলি করেছে আর রিজভী সাহেব মুর্খের মতো বলেছেন। সরকার বরং ২০ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় করেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রয়োজনে টিআইবিকে আইনগত নোটিশ দেওয়া হবে। এ ধরনের মিথ্যাচার, গবেষণার নামে দেশকে দোষী করা, সরকারের বিরুদ্ধে বিষোদগার করা, যেখানে সরকার আজকে সমগ্র বিশ্ব কর্তৃক প্রশংসিত। ১৩০টা দেশে যখন শুরুই হয়নি তখন বাংলাদেশ টিকা কার্যক্রম শুরু করেছিল। বাংলাদেশে ২৫ কোটি ডোজের বেশি টিকা দেওয়া হয়েছে, পুরোটাই বিনামূল্যে।’