ঢাকা, শনিবার, ২১ মে-২০২২ : জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধী দলীয় উপনেতা জনবন্ধু গোলাম মোহাম্মদ কাদের এমপি বলেছেন, কর্তৃত্ববাদী সরকারের সামনে প্রশাসন বা সংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলো অসহায় হয়ে পড়ে। তাই কর্তৃত্ববাদী সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে আশংকা আছে। তিনি বলেন, ইতোমধ্যেই সরকার প্রধান ঘোষণা করেছেন আগামী জাতীয় নির্বাচন হবে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন ইভিএম-এ। সবগুলো আসনে ইভিএম-এ ভোট গ্রহণ না করলেও, যে সকল আসনে সরকার দলীয় প্রার্থীরা প্রকাশ্যে প্রভাব বিস্তার করতে পারবে না সেখানে হয়তো ইভিএম-এ ভোট গ্রহণ চলবে। তিনি বলেন, জাতীয় পার্টি প্রহসনের নির্বাচন চায় না। নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে রাজনৈতিক দলকে আলোচনার জন্য ডাকা হলে, আমরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে সংলাপে অংশ নেবো।আজ দুপুরে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান এর বনানী কার্যালয় মিলনায়তনে স্বেচ্ছাসেবি সংগঠন আলোকিত মানুষ ফাউন্ডেশন এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি নাজমিন সুলতানা তুলির নেতৃত্বে একদল নারী উদ্যোক্তা জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের এর হাতে ফুল দিয়ে জাতীয় পার্টিতে যোগ দেন। এসময় তাদের স্বাগত জানিয়ে দেয়া বক্তৃতায় জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের একথা বলেন।প্রধান অতিথি হিসেবে দেয়া বক্তৃতায় জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের আরো বলেন, আওয়ামী লীগ ও বিএনপি দেশে উপনিবেশিক শাসন ব্যবস্থা চালু করেছে। তিনি বলেন, উপনিবেশিক আমলে মানুষকে শোষন করতে প্রশাসক নিয়োগ দেয়া হতো। প্রশাসকদের জবাবদিহিতা থাকতো শুধু সরকারের কাছে, কারন সাধারন মানুষের কাছে প্রশাসকদের কোন জবাবদিহিতা থাকে না। বর্তমানে দেশে গণতন্ত্রের ছিটেফোঁটাও নেই। সকল ক্ষেত্রে প্রসাশক নিয়োগ দেয়া হয়েছে, রাজনীতিবিদদের কোন কর্তৃত্ব নেই। তাই দেশের জনগণের কাছে কারো জবাবদিহিতা নেই।এসময় জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের আরো বলেন, আওয়ামী লীগ ও বিএনপির আদর্শগত পার্থক্য থাকলেও, চরিত্রগত কোন পার্থক্য নেই। দল দুটি দুণীঁতি, দুঃশাসন, চাঁদাবাজী, টেন্ডারবাজী, দলবাজী করে মানুষের মাঝে বিভেদ তৈরী করেছে। তারা বারবার রাষ্ট্র ক্ষমতায় গিয়ে দেশের মানুষের মাঝে বৈষম্য সৃষ্টি করেছে। দেশের মানুষের কোন অধিকার নেই, দেশের মানুষের নিরাপত্তা নেই। হাসপাতালের জন্য বড় বড় ভবন তৈরী হচ্ছে, কিন্তু হাসপাতালে ডাক্তার নেই, প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি নেই। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান করা হচ্ছে, কিন্তু সেখানে লেখাপড়া নেই, ছাত্রদের শুধু পাশ করিয়ে দেয়া হচ্ছে। আবার মাদক নিয়ন্ত্রণে কার্যকর কোন উদ্যোগ নেই। অভিযোগ আছে জাতিকে ধংস করতে মাদক বিস্তারে ক্ষমতাশীনরা জড়িত।সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেন, আগামী নির্বাচনে জাতীয় পার্টি কোন জোটে যাবে তা নির্বাচনের পূর্বে পরিস্থিতি ও সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা বুঝে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। তবে, বর্তমানে তিনশো আসনে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়েই রাজনীতির মাঠে এগিয়ে চলছে জাতীয় পার্টি।এসময় জাতীয় পার্টি মহাসচিব মোঃ মুজিবুল হক চুন্নু এমপি বলেন, ব্যবসায়ীদের সাথে আলোচনা করে সয়াবিন তেলের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে সরকার। গেলো তিন বছরে মানুষের ব্যায় বেড়েছে ৪০ শতাংশ, কিন্তু আয় বাড়েনি। আওয়ামী লীগের দুর্ণীতি ও দুঃশাসনের কারণে দেশের মানুষ আর আওয়ামী লীগকে রাষ্ট্র ক্ষমতায় দেখতে চায় না। মন্ত্রীরা যা বলেন, তা সাধারণ মানুষ বিশ^াস করেন না। মন্ত্রীরা দেশের মানুষকে সম্মান দিয়ে কথা বলতে জানেন না। আবার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন বিএনপিকেও বিশ^াস করেন না সাধারণ মানুষ। দুটি দলের বিকল্প হিসেবে জাতীয় পার্টিকে রাষ্ট্র ক্ষমতায় দেখতে চায় দেশের মানুষ। তাই জাতীয় পার্টিকে আরো শক্তিশালী করতে নেতা-কর্মীদের প্রতি আহবান জানান জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান।যোগদান অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু এমপি, উপস্থিত ছিলেন- জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সাহিদুর রহমান টেপা, এডভোকেট শেখ মুহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম, এডভোকেট মোঃ রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, সৈয়দ দিদার বখত, চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা শেরীফা কাদের এমপি, নাজনীন সুলাতানা, মাশরুর মওলা, ভাইস চেয়ারম্যান শফিউল্লাহ শফি, মোঃ জসীম উদ্দিন ভূঁইয়া, যুগ্ম মহাসচিব ফখরুল আহসান শাহজাদা, আব্দুল হামিদ ভাসানী, মোঃ বেলাল হোসেন, সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য এনাম জয়নাল আবেদীন, হুমায়ুন খান, ইফতেকার আহসান হাসান, আনোয়ার হোসেন তোতা, এমএ রাজ্জাক খান, জহিরুল ইসলাম মিন্টু, মঞ্জুরুল হক মঞ্জু, গোলাম মোস্তফা, এসএম আল জুবায়ের, মিজানুর রহমান মিরু, খোরশেদ আলম খুশু, যুগ্ম সম্পাদকমন্ডলী তিতাস মোস্তফা, মিঞাজী মোঃ শহীদুল ইসলাম লিটন, মামুনুর রহিম সুমন, মাহমুদ আলম, সমরেশ মন্ডল মানিক, কেন্দ্রীয় সদস্য সাজ্জাদ পারভেজ, আলমগীর হোসেন, জাকির হোসেন খান, আলাউদ্দিন আহমেদ, জিয়াউর রহমান বিপুল, মোঃ রেজাউল করিম।