প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যরে অপরূপ লীলাভূমি সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্চে এবং কটকা নদীর পূর্ব তীরে সুন্দরবনের সবচেয়ে আকর্ষণীয় পর্যটন স্থান কচিখালী(Kanchikhali Somodra Soikot)। নদীর এপার আর ওপার মিলে নয়নাভিরাম পর্যটন কেন্দ্র ও অভয়ারণ্য।ডাঙ্গায় নানা জাতের হরিণ, গাছে গাছে হাজার রকমের পাখি। আকাশেও মুক্ত ডানা মেলে পাখপাখালির ওড়াউড়ি। জলে ডলফিন আর কুমির-শুশুক মাঝে মধ্যেই ভেসে উঠছে। এসব দৃশ্য দেখলেই মনপ্রাণ জুড়িয়ে যায়। সুন্দরবনে যে কোন পর্যটকই আসুক না কেন কচিখালী যাওয়ার একটা সুপ্ত বাসনা তাঁদের মনে থেকেই যায়।কিন্তু বেশিরভাগ পর্যটকের সাধ্য হয় না মনোরম প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কচিখালী দেখার। কারণ মংলা থেকে লঞ্চে ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা সময় লাগে এখানে আসতে। কাঠের ট্রলারে ১২ ঘণ্টার বেশি সময় লাগে। তাছাড়া বন বিভাগ কাঠের ট্রলারে সেখানে কোন পর্যটক যেতে অনুমতি দেয় না। যে কোন নৌযানেই আকাশ ছোঁয়া ভাড়া। প্যাকেজ টু্যরে সেখানে যাতায়াতে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা খরচ হয়ে যায়। এরপরেও কচিখালীতে পর্যটকের অভাব নেই।দেশের নানা এলাকা থেকে দল বেঁধে এখানে আসছেন। কয়েকজন মিলে লঞ্চ ভাড়া করলে কিছুটা সসত্মায় তাদের ভ্রমণ হয়। বেশির ভাগ পর্যটকই এভাবে কটকা-কচিখালী গিয়ে থাকেন। বিদেশী পর্যটকরা অবশ্য সুন্দরবনে এলে কটকা-কচিখালী যাবেনই। কারণ এখানকার সৌন্দর্য বনের আর যে কোন পর্যটন কেন্দ্রের চেয়ে বেশি সুন্দর।দেশের সর্ব দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরের তীরে কটকা-কচিখালীর অবস্থান। সাগরে মিশে যাওয়া কটকা নদীর মোহনায় অবিরাম ডলফিন আর শুশুকের খেলা। মাঝেমধ্যে কটকা নদীতে কুমিরও ভেসে ওঠে। হাজার হাজার হরিণ পর্যটকদের আনন্দে আত্মহারা করে তোলে। বনের বৃক্ষ-লতাপাতায় ফুটে আছে ফুল আর ফল। পশুর, সুন্দরী, কেওড়া, বাইন, আমুর গাছে এখন ফল শোভা পাচ্ছে। আবার অন্য গাছ ও লতা জাতীয় বৃক্ষে নানা রং ছড়িয়ে ফুটে আছে ফুল। যেন গোটা সুন্দরবনটা একটা ফুল বাগান। এই বাগান প্রকৃতি নিজের হাতে গড়েছে। অসংখ্য নদী খাল দিয়ে ঘুরে বেরিয়ে পর্যটকরা এমন সুন্দর প্রকৃতিকে উপভোগ করছেন।কচিখালীতে বাঘের আনাগোনা বেশি বলে জানান স্থানীয় জেলেরা। জেটি থেকে উঠে প্রথমেই বন কার্যালয় থেকে সোজা দক্ষিণে ঘন বন। ভিতরে মিঠা জলের পুকুর। এই বনের শেষ সীমনায় গিয়ে ঠেকেছে সমুদ্র সৈকত। পশ্চিম পাশে ঘন বনে হরিণ, শুকর, বানর, বন মোরগ, কুমির, অজগর সাপসহ বিভিন্ন বন্য প্রাণী লক্ষ্য করা যায়। এই স্থান থেকে সামান্য উত্তরে একটি খাল বনের ভিতর দিয়ে সোজা পশ্চিমে চলে গেছে। একটু ভেতরের দিকে এ খালের জল সারা বছরই টলটলে স্বচ্ছ থাকে।