পদ্মা সেতুর উদ্বোধন হচ্ছে ২৫ জুন। এই সেতু চালুর পর সারা দেশের সঙ্গে সহজ যোগাযোগের সুযোগে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অর্থনীতি জেগে উঠবে। গতি আসবে ব্যবসা-বাণিজ্যে। গড়ে উঠবে নতুন নতুন শিল্পকারখানা। কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকত ও সুন্দরবনের পর্যটনশিল্প নিয়ে নতুন করে স্বপ্ন দেখছেন এ খাতের ব্যবসায়ীরা। এসব নিয়ে আমাদের আয়োজন
পদ্মা সেতু ঢাকা এবং দক্ষিণ ও দক্ষিণ–পশ্চিমাঞ্চলের শুধু যোগাযোগব্যবস্থাকে বদলে দেবে না, বদলে দেবে অর্থনীতিকে। এই সেতুর কারণে এসব অঞ্চলের ব্যবসা-বাণিজ্যের সম্প্রসারণ হবে। কর্মসংস্থান হবে, মানুষের আয় বাড়বে, দারিদ্র্য বিমোচন হবে। এই সেতুই হয়ে উঠতে পারে দেশের নতুন অর্থনৈতিক করিডর।
সেতু চালু হলে দেশের অর্থনীতিতে একটি বড় পরিবর্তন আসবে বলে আশা করা হচ্ছে। সেতু বিভাগ বলেছে, সার্বিকভাবে দেশের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ১ দশমিক ২৩ শতাংশ বাড়বে।
পদ্মা সেতুর মূল্যায়ন নিয়ে ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জিডিপি একই প্রবৃদ্ধির কথা বলা হয়। এই সেতু দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জিডিপি প্রবৃদ্ধি বাড়াবে ২ দশমিক ৩ শতাংশ।
পদ্মা সেতুর কাজ শুরুর আগে বেসরকারি উন্নয়ন গবেষণা সংস্থা সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) চেয়ারম্যান বজলুল হক খন্দকার ও নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান অর্থনৈতিক সম্ভাবনা নিয়ে গবেষণা করেন। সেখানে তাঁরা দেড় শতাংশ প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধির কথা বলেন। অবশ্য ওই গবেষণা সেতুতে রেলসেতু সংযোগ করার আগে করা।
জিডিপিতে অবদান বাড়লে স্বাভাবিকভাবে তা দারিদ্র্য বিমোচনে সহায়তা করবে। এডিবির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পদ্মা সেতুর কারণে জিডিপি বাড়লে দারিদ্র্য বিমোচনের হার বাড়বে শূন্য দশমিক ৮৪ শতাংশ।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) দারিদ্র্য মানচিত্র অনুযায়ী, পদ্মার ওপারের ২১টি জেলায় ১৩৩টি উপজেলা আছে। এসব উপজেলার মধ্যে ৫৩টি উচ্চ দারিদ্র্যঝুঁকিতে আছে। এর মধ্যে ২৯টি বরিশাল বিভাগে। এ ছাড়া ৪২টি উপজেলা মধ্যম দারিদ্র্য এবং ৩৮টি নিম্ন দারিদ্র্যঝুঁকিতে আছে।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, সেতু চালুর পর ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণ হলে দ্রুত ওই এলাকার মানুষের আয় বেড়ে দারিদ্র্য বিমোচন হবে।
রংপুর, রাজশাহী ও ময়মনসিংহ বিভাগের পরে খুলনা ও বরিশাল বিভাগে দারিদ্র্যের হার বেশি। এ দুটি বিভাগে দারিদ্র্যের হার যথাক্রমে সাড়ে ২৭ ও সাড়ে ২৬ দশমিক ৫০ শতাংশ।