রোববার (১০ জুলাই) কোরবানির পর ছাগলের চামড়া না নেওয়ার কারণ হিসেবে আরতদাররা বলছেন, ছাগলের একটি চামড়ার পেছনে তিনকেজি লবণ প্রয়োজন। এতে খরচ হচ্ছে ৩০ টাকা। এর সঙ্গে শ্রমিক ও পরিবহন খরচ মিলিয়ে মোট ৬০ টাকা খরচ হয়। সে হিসেবে ছাগলের চামড়ায় সরকার নির্ধারিত পরিমাপে খরচ বেশি পড়ে যায়। তাই কেউ ছাগলের চামড়া নিতে চান না তারা।
পোস্তার আড়তদার শফিকুর রহমান বলেন, একজন গরুর চামড়ার সঙ্গে ৪ পিস ছাগলের চামড়া নিয়ে এসেছে। তারা ওই বিক্রেতার কাছ থেকে ছাগলের চামড়া কিনতে অপারগতা জানান। তারপরও তিনি চামড়া রেখে যেতে চাইলে ৪টি চামড়ায় ১০ টাকা দেওয়ার কথা বলেন। পরে ১০ টাকা নিয়েই চামড়া রেখে যান ওই ব্যক্তি। এর ফলে ছাগলের চামড়া বিক্রিতে খরচ ওঠা দূরের কথা চায়ের দামও হয়নি। ফুটপাতে এখন এক কাপ চা খেতে ৫ টাকা লাগে। আর একটি চামড়ার দাম পড়েছে মাত্র আড়াই টাকা। ছাগলের চামড়ার এমন করুণ পরিণতি গত দুই বছর ধরেই চলছে।
এদিকে লালবাগের পোস্তার কাঁচা চামড়ার আড়তদাররা গত বছরের তুলনায় এবার চামড়াপ্রতি অন্তত গড়ে ১০০ টাকা বেশি দামে কিনছেন। এতে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা কিছুটা লাভবান হচ্ছেন। যারা চামড়া সংরক্ষণ করছেন তাদের অতিরিক্ত খরচ ৭০ টাকা বেড়েছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা। ট্যানারি মালিকদের প্রতিনিধি আব্দুস সালাম বলেন, গড়ে এবার প্রতিটি কাঁচা চামড়ার দাম ১০০ টাকা বেড়েছে।
গতবছরের তুলনায় প্রতি বর্গফুটে ৭ টাকা বাড়িয়ে কোরবানির গরু ও খাসির চামড়ার দাম নির্ধারণ করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
এবার কোরবানির গরুর লবণযুক্ত চামড়ার দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ঢাকাতে ৪৭ থেকে ৫২ টাকা প্রতি বর্গফুট। গত বছর ঢাকায় গরুর চামড়ার দাম নির্ধারণ করা হয়েছিল ৪০ থেকে ৪৫ টাকা। আর ঢাকার বাইরে গরুর চামড়ার দাম হবে প্রতি বর্গ ফুটে ৪০ থেকে ৪৪ টাকা, যা গত বছর ছিল ৩৩ থেকে ৩৭ টাকা। খাসির চামড়ার দাম নির্ধারণ করা হয়েছে প্রতি বর্গফুটে ১৮ থেকে ২০ টাকা। খাসির চামড়া সারাদেশে একই দামে বিক্রি হবে। গত বছর খাসির চামড়ার দাম ছিল ১৫ থেকে ১৭ টাকা।
প্রসঙ্গত, পশুর চামড়া সংগ্রহের সবচেয়ে বড় মৌসুম ঈদুল আজহা। দেশে সারাবছর যে পরিমাণ পশু জবাই হয়, তার ৬০ শতাংশই হয় এই ঈদে।