ফজলুর রহমান,ঠাকুরগাঁওঃ
ইতালির ৪০ বছর বয়সী যুবকের সাথে বিয়ে করলেন ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার ১৯ বছর বয়সী রত্না রানী।
প্রেমের টানে নিজ দেশ ইতালি থেকে এসে আলী সান্দ্রে চিয়ারোমিন্তে (৩৯) নামে এক মধ্য বয়সী যুবক বিয়ে করলেন ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গীর রত্না রানী (১৯) নামে এক তরুণীকে।
উপজেলার চাড়োল ইউনিয়নের খোকোপাড়া গ্রামের দিনমজুর মারকুস দাসের মেয়ে রত্না রানী দাস (১৯)। গতকাল সোমবার (২৫ জুলাই) রাতে মারফুজ দাসের নিজ বাড়িতে বিবাহ-বন্ধনে আবদ্ধ হোন তারা৷
পরিবার সূত্রে জানা যায়, তরুণীর চাচা জসেফ পরিবার নিয়ে ইতালিতে থাকেন। তিনি ইতালির ওই যুবকের অফিসে চাকুরী করেন। একসময় ইতালির যুবক বিয়ে করতে চাইলে তার ভাতিজি রত্না রানী দাস এর ছবি দেখালে যুবক রত্না রানীকে পছন্দ হয়। পরে যুবক ও তরুনীর মধ্যে প্রায় ৮ মাস ইমুতে কথোপকথন হয়। এরপর গতকাল সকালে ইতালি থেকে ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গীতে আসেন ওই মধ্যে বয়সী যুবক। পরে ওইদিন রাতে পারিবারিক ভাবে তাদের বিবাহ সম্পন্ন হয়।
প্রতিবেশী জতিন চন্দ্র বলেন, অন্য সকল বিয়ের চেয়ে এটি একটি ভিন্ন বিয়ে। কারণ বিদেশী ছেলে আর দেশি মেয়ে বিয়ে এটি। অনেক আনন্দ ও উল্লাস করেছি সকলেই। আশেপাশের অনেকে ছুটে আসছে বিদেশী জামাইকে এক পলক দেখতে।
রত্না রানীর বাবা মারকুস দাস বলেন,আমার এক ভাই ইতালি থাকেন। তার মাধ্যমেই জামাইয়ের সাথে আমার মেয়ের পরিচিয় হয়। পরিচয় হওয়ার পর মোবাইলের মাধ্যমে তাদের প্রেম হয়। তারপরে ওই যুবক গত কালকে আমাদের বাসায় আসেন। সকল আইন মেনে ধুমধাম করে বিয়ে দিয়েছি।
রত্না রানীর মা জানগি দাস বলেন, আমরা পারিবারিক ভাবে মেয়েকে বিয়ে দিয়েছি। জামাই অনেক ভাল ও শান্ত স্বভাবের। আমার মেয়েকে ইতালি নিয়ে যাওয়ার পরে আমরাও যাব।
রত্না রানী বলেন, আমার চাচা ইতালিতে থাকেন। সেই সুবাধে আমার পরিচয় করিয়ে দেয় তার সাথে। পরে পরিবারের সকলেরই পছন্দ হয়। আমার পরিবার রাজি থাকায় প্রায় আট মাস ইমুতে কথাবলি। আমার চাচা আমাকে কিছু ভাষা শিখিয়ে দিয়েছিলেন। সেগুলো দিয়ে তার সাথে আমি কথা বলি। তারপরে গতকাল আমাদের বিয়ে হয়। বর হিসেবে তিনি অনেক ভালো মনের মানুষ। তিনি সবকিছু মানিয়ে নিতে চেষ্টা করেন। তার সাথে আমি আমার চাচা যে ভাষায় কথা বলা শিখিয়েছেন সেভাবে কথা বলছি। ভাষাগুলো শিখতে আরো সময় লাগবে। আমি চেষ্টা করছি শিখতে। কিছু দিনের মধ্যে সকল প্রকিয়া শেষ করে আমাকে ইতালিতে নিয়ে যাবেন।
চাড়োল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান দিলীপ কুমার রায় বলেন, আমি নিজেও বিয়েতে অংশগ্রহণ করেছিলাম। ভিসা সংক্রান্ত কাজ শেষ করে ছেলেটি মেয়েটিকে ইতালি নিয়ে যাবেন। এতে করে দারিদ্র্যতাও ঘুচবে বলে আমার মনে হয়। মেয়ের পরিবারে স্বচ্ছলতা ফিরে আসবে।
বালিয়াডাঙ্গী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খায়রুল আনাম বলেন, ইতালিয়ান নাগরিক বালিয়াডাঙ্গীতে এসে বিয়ের ঘটনাটি শুনেছি। তাদের পারিবারিক ভাবে বিয়ে হয়েছে। তাদের সার্বিক নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছে।
তবে এই বিয়ে নিয়ে জন মনে অনেক প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে, কারণ ইতি মধ্যে বিদেশ থেকে অনেক ছেলে মেয়ে বাংলাদেশে এসেছে প্রেমের টানে, তারা বিয়েও করেছে, তবে অধিকাংশ বিয়েই টিকেনি। ভেঙে গেছে অনেক সংসার।
তাই জনমনে প্রশ্ন দেশি প্রেমের বিয়ে গুলো যখন টিকছে না তখন বিদেশির সাথে বাংলাদেশি মেয়ের বিয়ে কতটুকু টিকবে এটাই প্রশ্ন। এছাড়াও মেয়ের বয়সের থেকে ছেলের বয়স দিগুণ।