শ্রীলঙ্কাকে নতুন করে কোনো ঋণ দেবে না বলে গতকাল শুক্রবার জানিয়েছে বিশ্বব্যাংক। ওয়াশিংটনভিত্তিক বৈশ্বিক এ ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানটি বলেছে, ধসে পড়া অর্থনীতি স্থিতিশীল করতে দেউলিয়া (ঋণখেলাপি) শ্রীলঙ্কা যদি বড় ধরনের অর্থনৈতিক সংস্কার পদক্ষেপ না নেয় তাহলে ঋণ দেওয়া হবে না। খবর এএফপির। নজিরবিহীন মন্দার মুখে শ্রীলঙ্কা। দেশটির ২ কোটি ২০ লাখ মানুষ কয়েক মাস ধরে খাদ্য ও জ্বালানি ঘাটতি, ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎ না থাকা, ব্যাপক মূল্যস্ফীতির সঙ্গে জীবনযাপন করছে। এতে দ্বীপরাষ্ট্রটিতে বিক্ষোভ হয়েছে। বিক্ষোভের মুখে এ মাসের শুরুতে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট দেশ ছেড়ে পালানোর পরে পদত্যাগ করেন।শ্রীলঙ্কার বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ এখন ৫২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। গত এপ্রিলে শ্রীলঙ্কা ঘোষণা দিয়ে জানায়, তারা আপাতত ঋণ শোধ করতে পারবে না। এর মধ্য দিয়ে দেশ স্বাধীনের পর প্রথমবারের মতো দেশটি আনুষ্ঠানিকভাবে নিজেদের দেউলিয়া ঘোষণা করে। এরপরে নতুন ঋণ পেতে তৎপরতা শুরু করে দেশটির সরকার।বৈশ্বিক অন্যান্য ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানের মতো বিশ্বব্যাংকেরও দ্বারস্থ হয়েছিল শ্রীলঙ্কার সরকার। তবে বিশ্বব্যাংক বলেছে, শ্রীলঙ্কায় চলমান সংকট নিয়ে তারা উদ্বিগ্ন। কিন্তু দেশটির সরকার অর্থনীতির অচলাবস্থা নিরসনের জন্য এখন যেসব সংস্কার আনা জরুরি তা কার্যকরের পদক্ষেপ না নেয়, তাহলে তাদের ঋণ দেওয়া হবে না।সংস্থাটি বলেছে, ‘একটি যথাযথ সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি কাঠামো না হওয়া পর্যন্ত বিশ্বব্যাংক শ্রীলঙ্কাকে নতুন অর্থায়নের পরিকল্পনা করছে না। এ জন্যে গভীর কাঠামোগত সংস্কার প্রয়োজন। অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ও অর্থনৈতিক সংকটের জন্য দায়ী মূল কাঠামোগত বিষয় মোকাবিলার কথা ভেবেই সংস্কার আনতে হবে।’এদিকে বেল আউটের (অর্থনৈতিক পুনর্গঠন) জন্য আরেক ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সঙ্গে শ্রীলঙ্কার সরকারের আলোচনা চলছে। তবে আইএমএফ থেকে ঋণ পাওয়ার প্রক্রিয়া দীর্ঘ। ঋণ পেতে কয়েক মাস এমনকি বছরও লেগে যেতে পারে। তবে এ নিয়ে গতকাল শুক্রবার থেকে উভয় পক্ষের মধ্যে আবারও আলোচনা শুরু হয়েছে।