ভয়াবহ খরা ও রেকর্ডভাঙা তাপদাহের কারণে চীনের মধ্য ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে কৃত্রিম উপায়ে বৃষ্টিপাতের চেষ্টা করছে কর্তৃপক্ষ। এশিয়ার দীর্ঘতম জলপথ ইয়াংজি নদীর পানি নেমে গেছে রেকর্ড পর্যায়ে। নদীর কিছু অংশে স্বাভাবিকের চেয়ে অর্ধেকেরও কম বৃষ্টিপাত হয়েছে।
কর্মকর্তারা বলছেন, জলবিদ্যুতের জন্য বানানো জলাধারগুলোর পানি অর্ধেকের মতো নেমে গেছে। এদিকে গরমের মধ্যে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র চালানো বেড়ে যাওয়ায় বিদ্যুৎ উৎপাদনে চাপের মধ্যে পড়েছে কোম্পানিগুলো। টানা দুই মাস ধরে তাপদাহ বইছে চীনে, এত দীর্ঘ সময় তাপপ্রবাহের রেকর্ড আর সে দেশে নেই বলে জানিয়েছে চীনের জাতীয় জলবায়ুকেন্দ্র। খবর বিবিসির।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, ইয়াংজি নদীর আশপাশের খরায় আক্রান্ত প্রদেশগুলো বৃষ্টিপাতের ঘাটতি মোকাবিলা ক্লাউড সিডিং বা কৃত্রিম বৃষ্টি ঘটানোর চেষ্টা করছে। হুবেইসহ কিছুসংখ্যক প্রদেশে রকেটের মাধ্যমে আকাশে রাসায়নিক পদার্থ ছিটানো হচ্ছে।
ক্লাউড সিডিংয়ের মাধ্যমে মূলত আকাশে বৃষ্টির জন্য উপযুক্ত না হওয়া মেঘের ওপরে ড্রাই আইস বা সিলভার আয়োডাইডের মতো রাসায়নিক বিমান বা রকেটের মাধ্যমে ছিটানো হয়। এরপর মেঘ ঘনীভূত হয়ে বৃষ্টি হয়ে মাটিতে ঝরে। কিন্তু চীনে তাপদাহের মধ্যে কিছু এলাকায় মেঘের ছিটেফোঁটাও নেই। ফলে সেসব এলাকায় কৃত্রিম বৃষ্টিও ঝরানো যাচ্ছে না।
অপরদিকে চীনের পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ কিনহাইতে ভারি বৃষ্টিপাতে সৃষ্ট বন্যায় ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া নিখোঁজ রয়েছেন ৩৬ জন। বৃহস্পতিবার দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমগুলো এ তথ্য জানিয়েছে। বুধবার রাতে কিনহাই প্রদেশে হঠাৎ করে ভারি বৃষ্টিপাত শুরু হয়। এতে প্রদেশটির দাতং হুই এবং তু এলাকার পাহাড়ে বন্যা ও ভূমিধস শুরু হয়। এই এলাকায় চার লাখের বেশি মানুষের বাস।
গত জুন থেকে চরম আবহাওয়ার মুখে পড়েছে চীন। তীব্র তাপদাহ ও বন্যার কবলে পড়ছে দেশটি। সরকার এই আবহাওয়ার জন্য জলবায়ু পরিবর্তনকে দায়ী করছে। তারা বলছে, এই পরিবর্তনের জেরে তাদের অর্থনীতি ও সমাজের ওপর বিরূপ প্রভাব বেড়ে চলেছে।