গাজীপুরে প্রবাস ফেরত আব্দুল জলিলকে (৫২) পিটিয়ে হত্যা মামলার আসামিদের গ্রেফতার এবং ফাঁসির দাবিতে নিহতের স্বজনসহ স্থানীয় গ্রামবাসী বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছেন। সোমবার (৩১ অক্টোবর) দুপুরে জেলার ভাওয়ালগড় ইউনিয়নের ইজ্জতপুর-ভাওয়াল রিসোর্ট-বাঘের বাজার সড়কের নলজানি (মধ্যপাড়া) গ্রামবাসী এ বিক্ষোভ করে। হত্যার ঘটনায় পরদিন নিহতের ছেলে ফরহাদ রেজা বাদী হয়ে জয়দেবপুর থানায় মামলা দায়ের করে।
মামলায় আসামীরা হলেন নলজানি (মধ্যপাড়া) গ্রামের ইমান উদ্দিনের ছেলে সিদ্দিক মিয়া (৪৭), ইদ্রীস মিয়া (৪০), সিদ্দিক মিয়ার স্ত্রী রিনা বেগম (২৮) এবং পূর্বপাড়ার নিজাম উদ্দিনের ছেলে বাদল মিয়া (৪৮)।
নিহতের স্ত্রী সাজেদা খাতুন জানান, তার স্বামী আব্দুল জলিলের সাথে তার চাচাতো ভাই সিদ্দিক মিয়া ও ইদ্রীস মিয়ার সাথে দীর্ঘদিন যাবত জমি সংক্রান্ত বিরোধ চলে আসছে। এ নিয়ে প্রায়ই তার স্বামীকে বাড়ীঘর ছেড়ে চলে যাওয়ার হুমকি দিতো আসামীরা। গত শুক্রবার (২৮ অক্টোবর) বাড়ীর পাশের মসজিদ থেকে এশার নামাজ শেষে রাত ৮ টায় বাড়ী ফিরছিলেন তিনি। এসময় অভিযুক্তরা জলিলকে পথরোধ করে পিটিয়ে ঘটনাস্থলেই মেরে ফেলে।
নলাজানি গ্রামের বাসিন্দা অশীতিপর বৃদ্ধ শাহাদাত আলী শেখ বলেন, নিহত জলিল দীর্ঘদিন যাবত প্রবাস (সৌদিতে) জীবন কাটিয়ে করোনাকালীন সময়ে দেশে এসে আর প্রবাসে জাননি। এলাকার কারো সাথে তার কোনো বিরোধ ছিল না।
গাজীপুর সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের আহবায়ক কমিটির সদস্য স্থানীয় নেতা আমান উল্লাহ বলেন, চার নম্বর আসামী বাদল নিহত জলিলের কাছ থেকে জমি পাওয়ার (বিক্রি করার ক্ষমতা) নিয়ে জমি দখলে নেওয়ার জন্য জলিল ও তার পরিবারের সদস্যদেরকে বিভিন্নভাবে হয়রানী করে। সে এলাকার আরো ২০ থেকে ২৫টি পরিবারের কাছ থেকে পাওয়ার নিয়ে জমি বিক্রি করে জমির মালিকদের টাকা না দিয়ে প্রতারণা করে আসছে। এসবের প্রতিবাদ করলে সে ওইসব নিরীহ পরিবারের সদস্যদেরকে সাজানো মিথ্যা মামলা দিয়ে হিয়রানী করছে।
বিক্ষোভকারী নলজানি (মধ্যপাড়া) গ্রামবাসীরা বলেন, হত্যার তিনদিন পরও কোনো আসামী গ্রেফতার না হওয়ায় নিহতের স্বজনসহ তাদের মাঝে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ছে। তারা আসামীদের গ্রেফতার ও ফাঁসি দাবী করেন।
অভিযুক্ত আসামীদের কেউ বাড়িতে না থাকায় এবং তাদের মোবাইল বন্ধ থাকায় তাদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জয়দেবপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ইলিয়াস হোসেন জানান, ঘটনার পর থেকে আসামীরা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে রয়েছে। তাদের গ্রেফতারে প্রতিদিনই বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালানো হচ্ছে। যত দ্রæত সম্ভব তাদেরকে গ্রেফতার করা সম্ভব হবে।
উল্লেখ্য, শুক্রবার (২৮ অক্টোবর) রাত আনুমানিক ৮ টায় এশার নামাজ পড়ে মসজিদ থেকে বাড়ি ফেরার পথে বাড়ির পাশেই হত্যাকাÐের ঘটনা ঘটে।