স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, নিজের প্রভাব খাটিয়ে এ সড়কের রাস্তা পাকাকরণের দায়িত্ব নেন ফুলগাজী সদর ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সেলিম। কাজ পেয়ে নানা অনিয়ম, গাফিলতি, নিম্নমানের ইট ও নির্মাণ কাজে বালির পরিবর্তে ফসলি জমির মাটি ব্যবহার করা হয়েছে।
স্থানীয় এক যুবক সবুজ বলেন, রাস্তার পাকাকরণের কাজ শুরু করে হঠাৎ বন্ধ করে দেয়া হয়। এতে মানুষের যোগাযোগে সমস্যার সৃষ্টি হয়। পরে এলাকার কয়েকজন যুবক মিলে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবদুল আলিম মজুমদারের কাছে গেলে তিনি দ্রুত কাজ শুরু হবে বলে আশ্বাস দেন। কিছুদিন পর এক সকালে কাজ শুরু করা হলেও দুপুরে অজানা কারণে আবার বন্ধ হয়ে যায়।
কাজ বন্ধের নির্দেশনার কথা স্বীকার করে, নির্মাণ কাজে নিয়োজিত দুই নারী শ্রমিক বলেন, প্রকৌশলী কাজ বন্ধ করে দেয়ার একদিন পর সেলিম চেয়ারম্যান আমাদের আবার কাজে ফিরতে বলেছেন।
স্থানীয় বালি ও মাটি ব্যবসায়ী নুর নবী বলেন, বালি ও মাটি সেলিম চেয়ারম্যানের কাছে বিক্রি করেছি। তবে আমি বিক্রেতা, বিক্রি করেছি। তিনি কোথায় ব্যবহার করবেন তা আমার জানার বিষয় না।
আমজাদহাট ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মীর হোসেন মীরু বলেন, রাস্তাটি আমার বাবার নামে করা হচ্ছে। বালির পরিবর্তে মাটি ব্যবহার এবং অন্য অনিয়মের বিষয়ে কিছু জানা নেই। কাজ করছেন ঠিকাদার সেলিম। বিষয়টি তিনি ভালো বলতে পারবেন।
অভিযোগ প্রসঙ্গে ফুলগাজী সদর ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সেলিম বলেন, অনেক সময় কাজের সুবাদে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের মালিক বাবুলের সঙ্গে থাকি। এলাহী এন্টারপ্রাইজকে কার্যাদেশ দেয়া হয়েছে। এলজিইডি সরাসরি আমার নাম বলতে পারবে না। এমন কিছু হলে তারা কাগজপত্রের মাধ্যমে প্রমাণ করুক।
উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) সৈয়দ আসিফ মুহাম্মদ বলেন, নির্মাণ কাজে মাটি মিশ্রিত বালু ব্যবহার, নিয়মমাফিক দপ্তরকে অবগত না করা, নির্দেশনা থাকলেও কোনো ধরনের পরীক্ষা প্রতিবেদন ছাড়া রাস্তা পাকাকরণ কাজ চালিয়ে নেয়ায় সেলিম চেয়ারম্যানকে কাজ বন্ধের নির্দেশনা দেয়া হয়েছিল। আদেশ অমান্য করে তিনি আবার কাজ শুরু করলে উপ-সহকারী প্রকৌশলীকে পাঠিয়ে পুনরায় কাজ বন্ধ করে দেয়া হয়। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে। জেলা কার্যালয়ও তাকে ত্রুটি সংশোধনপূর্বক লিখিত জবাব দেয়ার নির্দেশনা দিয়েছে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর ফেনীর নির্বাহী প্রকৌশলী হাসান আলী বলেন, উন্নয়ন কাজে অনিয়ম বা দুর্নীতির সুযোগ নেই। যেকোনো অনিয়মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।