জয়পুরহাটের হেমায়েত দেশকে ভালোবেসে পতাকা বিক্রি করে
জয়পুরহাট প্রতিনিধি
আপডেট :
বুধবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০২২
জয়পুরহাট প্রতিনিধি:এক নদী রক্ত পেরিয়ে/বাংলার আকাশে রক্তিম সূর্য আনলে যারা/তোমাদের এই ঋণ কোনো দিন শোধ হবে না’। সত্যিই তো মহান মুক্তিযুদ্ধে যারা বুকের তাজা রক্ত দিয়েছেন তাদের রক্তের ঋণ কখনও শোধ হবে না। তবে শহীদদের রক্তের বিনিময়ে জাতি পেয়েছে সবুজ আয়তক্ষেত্রের মধ্যে লাল বৃত্তের বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা।
সবুজ রঙ বাংলাদেশের সবুজ প্রকৃতি ও তারুণ্যের প্রতীক, বৃত্তের লাল রঙ উদীয়মান সূর্য, স্বাধীনতা যুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারীদের রক্তের প্রতীক। বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের প্রতীক। বীর বাঙালির রক্তে দিয়ে অর্জিত এই লাল সবুজের পতাকা। আমাদের গৌরবের প্রতীকও এটি। বাঙালির গৌরবময় এই মাসে স্বাধীন দেশের বিজয় নিশান লাল-সবুজের পাতাকা উড়ে সর্বত্রই। বাঙালির অবিস্মরণীয় দিন ১৬ ডিসেম্বর।
এ বিজয় দিবস উপলক্ষে জয়পুরহাটে পতাকা বিক্রি করছেন হেমায়েত মাতব্বর। জেলার শহরে রাস্তাঘাটে দেখা মেলে মৌসুমি পতাকা বিক্রেতা। তাদের হাতে-কাঁধে ছোট-বড় আকারে পতাকা। ১০ টাকা থেকে শুরু করে ২০০ টাকা পর্যন্ত দামে বিক্রি হয়।
জানা যায়, জাতীয় পতাকা বিক্রেতা হেমায়েত মাতব্বরের বাড়ি ফরিদপুর জেলায়। তিনি গত ১ ডিসেম্বর রাজধানী ঢাকায় দেশকে ভালোবেসে পতাকা বিক্রি শুরু করেন।ঢাকা থেকে বগুড়া হয়ে জয়পুরহাটে এসেছেন পতাকা বিক্রি করতে। এ জেলায় বিক্রি শেষ হলে হিলি হয়ে দিনাজপুরে যাবে। তিনি সারা বছর কৃষি কাজে ব্যস্ত থাকেন। তবে ডিসেম্বর এলেই পতাকা কাঁধে বের হন তিনি। তবে শুধু টাকা উপার্জনের জন্যই পতাকা বিক্রি করেন এমনটি নয়। অন্যরকম ভালো লাগা থেকে লাল-সবুজের পতাকা বিক্রি করেন বলে জানালেন তিনি।
হেমায়েত বলেন, ‘আসন্ন বিজয় দিবস উপলক্ষে মানুষ আমার থেকে পতাকা কিনেন, এটা বেশ ভালো লাগে। শুধু টাকার জন্যই যে পতাকা বিক্রি করি, তা নয়। দেশে প্রতি ভালোবাসা ও মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর সৈনিকদের শ্রদ্ধা জানাতেই ১৮ বছর ধরে ডিসেম্বরে লাল-সবুজের পতাকা বিক্রি করতে রাস্তায় নামি।’
তিনি বলেন, ‘ডিসেম্বরের প্রথম ১০ দিনে গড়ে ৫০০ টাকা করে আয় করেছি। তবে দিন বাড়ার সাথে বিক্রি করে আয় বাড়ছে এবং দিনে হাজার টাকা থাকে। আর ১৫-১৬ ডিসেম্বর ভাগ্য ভালো থাকলে ভালো আয় হয়।’
রাস্তায় ঘুরে ঘুরে যারা পতাকা বিক্রি করেন, তাদের থেকেই কিনতে ভালোবাসে মারুফ নামে এক পথচারী। তিনি বলেন, ‘বিজয় দিবস আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সাহসী ভূমিকার কথা। বীর যোদ্ধাদের স্মরণ করতে পতাকা কিনতে এসেছি।
পতাকা কিনতে আসা জয়পুরহাট সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী শিপন বলেন, ‘১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসে বন্ধুরা মিলে একসঙ্গে বের হই। এদিনে হাতে লাল-সবুজের পতাকা না থাকলে বেশ বেমানান লাগে। তাই পতাকা কিনতে এসেছি।’