১২ দিন পর মৃত্যুর কাছে হেরে গেলেন পিটিয়ে আহত বৃদ্ধ
সুমন হোসেন, বিশেষ প্রতিনিধি মুন্সীগঞ্জ
আপডেট :
সোমবার, ২ জানুয়ারি, ২০২৩
বিশেষ প্রতিনিধি, মুন্সিগঞ্জ: মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় সীমানা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে সংঘর্ষের ঘটনায় ১২ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় এক বৃদ্ধ মারা গেছেন।এ ঘটনায় দুইজনকে আটক করেছে পুলিশ।রবিবার রাত চারটার দিকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় নিজ বাসায় মারা যান তিনি।নিহত বৃদ্ধের নাম মানিক মিয়া(৭০)।তিনি উপজেলার বালুয়াকান্দি ইউনিয়নের বড় রায়পাড়া গ্রামের মৃত চাঁন মিয়ার ছেলে।ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও নিহতের পরিবার জানায়,সীমানা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে প্রতিবেশী সালেহা বেগমের সঙ্গে প্রতিবেশী জালাল মিয়ার পরিবারের বিরোধ চলছিল।নিহত মানিক মিয়া সম্পর্কে সালেহা বেগমের বিয়াই।বাড়ির সীমানা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে সালেহা বেগমের সঙ্গে বেশ কয়েকবার জালাল মিয়ার স্ত্রী মায়া বেগমের ঝগড়াঝাঁটি হয়েছে।সর্বশেষ গত ২০ ডিসেম্বর দুপুরে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে সংঘর্ষে জড়ায় উভয়পক্ষ।এ সময় সালেহা বেগমের বিয়াই নিহত মানিক মিয়া ও তার ছেলে নুরুন্নবী সালেহা বেগমকে রক্ষায় এগিয়ে আসেন।মায়া বেগমও তার বেয়াই সাবেক ইউপি সদস্য বিল্লাল হোসেনকে খবর দেন।বিল্লাল হোসেন ১৪-১৫ জন লোক নিয়ে এসে প্রতিপক্ষের ওপর হামলা চালায়।এ সময় বিল্লাল হোসেন ও তার লোকজন প্রতিপক্ষের লোকজনকে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করে।পরে এলাকাবাসী তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়।গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকৎসকরা জানান,২০ ডিসেম্বর এ ঘটনায় আহত হয়ে ৩ জন হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসেন।তারা হলেন,মানিক মিয়া(৭০),তার ছেলে নুরুন্নবী (৩৪)এবং তার বিয়াইন সালেহা বেগম(৪৫)। আহতদের মধ্যে মানিক মিয়ার অবস্থা খারাপ ছিল।পিটিয়ে তার ডান হাত ভেঙে ফেলা হয় এবং গায়ের বিভিন্ন অংশে আঘাতের চিহ্ন ছিল। তাকে হাসপাতালে ভর্তি দেওয়া হয়েছিল।বাকি দুজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়।মানিক মিয়ার ছেলে নুরুন্নবী জানান, গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে দীর্ঘ ১২ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর আর্থিক অস্বচ্ছলতার কারণে তাকে বাসায় নিয়ে আসা হয়।এরপর রবিবার রাত চারটার দিকে বাসায় গুরুতর অসুস্থ হয়ে মারা যান তিনি।এদিকে মারধরের ঘটনায় গজারিয়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন সালেহা বেগম।মানিক মিয়া মারা যাওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে সোমবার ভোরে অভিযান চালিয়ে এ ঘটনায় বিল্লাল হোসেন ও মায়া বেগম নামে দুজনকে আটক করে পুলিশ।গজারিয়া থানার ওসি মোল্লা সাহেব আলী জানান,এ ঘটনায় অভিযান পরিচালনা করে দুইজনকে আটক করেছে পুলিশ।বাকি আসামীদের আটকের চেষ্টা চলছে।মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পেলে বিষয়টি হত্যা কি না তা নিশ্চিত হয়ে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।