ফরিদপুর জেলা প্রতিনিধি :ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা ফরিদপুরের ভাঙ্গাগামী প্রচেষ্টা পরিবহনের মাদরাসায় পড়ুয়া এক যাত্রীকে বাস থেকে তুলে নিয়ে ধর্ষণের অভিযোগে ওই বাসের সুপারভাইজার ও চালকের সহকারীসহ ৩ জনকে আটক করেছে ভাঙ্গা থানা পুলিশ।
সোমবার (৩১জুলাই) সকালে ভাঙ্গা পৌর সদরের কাপুড়িয়া সদরদির এলাকায় চালকের সহকারীর ভাড়া বাসা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। সেসময় (মাদ্রাসাছাত্রী) ওই বাস যাত্রীকে উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক তদন্তে ওই ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে ভাঙ্গা থানা পুলিশ।
এ ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃতরা হলেনঃ- প্রচেষ্টা পরিবহনের সুপারভাইজার আসিফ সরদার (২১), চালকের সহকারী রাকিব মাতুব্বর ইমন (২৪) এবং তার মা লিলি বেগম (৫০)।
পুলিশ জানায়, রবিবার সন্ধ্যায় ঢাকা থেকে প্রচেষ্টা পরিবহনের একটি বাসে পদ্মা সেতু হয়ে বাড়িতে ফিরছিল ওই মাদ্রাসাছাত্রী। সেসময় ওই ছাত্রীর বাবা-মা তার জন্য ভাঙ্গা বাস স্ট্যান্ডে অপেক্ষা আ করছিল। দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করেও মেয়ের খোঁজ আসেনা পেয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ করে তার পরিবার। পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ওই ছাত্রীকে চালকের সহকারীর ভাড়া বাসা থেকে উদ্ধার করে।
উক্ত ঘটনায় সোমবার সন্ধ্যায় ভুক্তভোগীর বাবা বাদী হয়ে ভাঙ্গা থানায় অপহরণ ও ধর্ষণ মামলা করেন। ছাত্রীর ভগ্নীপতি মো. সুমন আহমেদ সাংবাদিক দের বলেন, শ্যালিকাসহ পরিবার নিয়ে ঢাকার হাজারীবাগে একটি ভাড়া বাসায় থাকেন তারা। তার শ্যালিকা একটি মহিলা মাদ্রাসায় লেখাপড়া করে। রবিবার বিকেলে বাড়ি যাওয়ার জন্য তাকে বাবুবাজার থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গাগামী প্রচেষ্টা পরিবহনের একটি বাসে (ঢাকা মেট্রো ব-১১ ৬৪৮৩) তুলে দেন আমার স্ত্রী (ভিকটিমের বড় বোন)।
শ্যালিকাকে ভাঙ্গা বাস স্ট্যান্ড নামিয়ে দিতে বলে বাসের হেলপার ও সুপারভাইজারের ফোন নম্বর রেখে দেন তিনি। কিন্তু এর ঘণ্টা দুয়েক পর তিনি সুপারভাইজার, হেলপার এবং শ্যালিকার ফোন বন্ধ পান।
এদিকে ভাঙ্গায় বাস স্ট্যান্ড এলাকায় অপেক্ষায় থাকা তার শ্বশুরসহ বাড়ির লোকজন প্রচেষ্টা পরিবহনের ওই বাসটি খুঁজতে থাকেন। শেষ পর্যন্ত কোনো খোঁজ না পেয়ে রাত ৩টার দিকে ভাঙ্গা থানায় একটি মৌখিক অভিযোগ করেন তারা।
ভুক্তভোগী মাদ্রাসাছাত্রীর বাবা মো. কালাম শেখ বলেন, আমার মেয়েটি ঢাকায় সেজো মেয়ের বাসায় থেকে পড়ালেখা করে। আমার মেয়েকে যারা ধর্ষণ করেছে তাদের বিচার চাই।
ভাঙ্গা থানার সূত্রে জানা যায়, মৌখিক অভিযোগ পেয়ে নিখোঁজ ছাত্রীর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে অভিযানে নামে পুলিশ। সকালে বাসের সুপারভাইজার আসিফ সরদারকে আটক করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্যে হেলপার রাকিবের বাসায় অভিযান চালিয়ে ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করা হয়।
তিনি আরও জানান, প্রাথমিক তদন্তে ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় থানায় অপহরণ ও ধর্ষণ মামলা হয়েছে। আর ঘটনার সঙ্গে জড়িত ৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ভাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. জিয়ারুল ইসলাম বলেন, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে ডাক্তারি পরীক্ষা ও চিকিৎসার জন্য ফরিদপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
ঘটনার সঙ্গে আরও কেউ জড়িত কি-না, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধেও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
১ view