খাগড়াছড়ি থেকে মাসুদ রানা জয়: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেনি বিএনপি। সেইসাথে আঞ্চলিক দলের প্রার্থী না থাকা ও একমাত্র স্বতন্ত্র প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল হওয়ায় আওয়ামী লীগের শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী নেই ২৯৮ নং খাগড়াছড়ি আসনে। এছাড়া জাতীয় পার্টি ও ন্যাশনাল পিপলস পার্টির নবীন দুই প্রার্থীও পরিচিত নন রাজনৈতিক মাঠে। আর তৃনমুল বিএনপি প্রার্থী সবশেষ গুইমারা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে হেরেছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থীর কাছে। তাই শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বীহীন নির্বাচনের আভাস মিলছে এ আসনে। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মতে, হ্যাট্রিক বিজয়ের পথে কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা।
জানা যায়, ৯ উপজেলা ও তিন পৌরসভা নিয়ে গঠিত ২৯৮ নং খাগড়াছড়ি সংসদীয় আসন। এ আসনে আওয়ামী লীগের শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি ও প্রসিতপন্থী ইউপিডিএফ। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির অংশ না নেওয়া, আঞ্চলিক দল প্রসিতপন্থী ইউপিডিএফ প্রার্থী না দেওয়া ও একমাত্র স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি সমির দত্ত চাকমার প্রার্থীতা বাতিল হওয়ায় শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী নেই টানা দুইবারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরার। ভোটের মাঠে জাতীয় পার্টির নবীন প্রার্থী মিথিলা রোয়াজা ও ন্যাশনাল পিপলস পার্টির মনোনয়নে নির্বাচনে অংশ নেওয়া বাংলাদেশ কংগ্রেস নেতা মো. মোস্তফা রাজনীতির মাঠে একেবারেই অপরিচিত। আর তিনমূল বিএনপির প্রার্থী উশ্যেপ্রু মারমা এরআগে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রথম গুইমারা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলেও দ্বিতীয়বার আওয়ামী লীগ প্রার্থী মেমং মারমার কাছে হেরে যান। এছাড়া জেলাজুড়ে তার তেমন পরিচিতিও নেই। তাই শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বীহীন নির্বাচনের আভাস মিলছে পাহাড়ি এ আসনটিতে।
৯০ শতক থেকে এ আসনটি আওয়ামী লীগের দখলে। ১৯৯১ ও ১৯৯৬ (জুন) সালে এ আসনে বিজয়ী হয়েছিলেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী কল্পরঞ্জন চাকমা। ১৯৯৬ (ফেব্রুয়ারী) ও ২০০১ সালে বিএনপি প্রার্থী ওয়াদুদ ভুঁইয়া,২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ প্রার্থী যতীন্দ্র লাল ত্রিপুরা। সবশেষ ২০১৪ ও ২০১৮ সালে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা। জেলাজুড়ে তার জনপ্রিয়তাও ব্যাপক। তাই সমীকরণ মিলিয়ে একাধিক আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বলছেন, হ্যাট্রিক বিজয়ের পথে কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা
জেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা ২৩৬৪৫০ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছিলেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রসিতপন্থী ইউপিডিএফ সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থী নুতন কুমার চাকমা পেয়েছিলেন ৬০৩৪০ ভোট। বিএনপি প্রার্থী শহিদুল হক ভূঁইয়া পেয়েছিলেন ৫১২৮১ ভোট। ইসলামী আন্দোলনের আ: জব্বার গাজী ২৯৩৭ ও জাতীয় পার্টির সোলায়মান আলম শেঠ ২৩৪৩ ভোট।
অন্যদিকে এ আসনে এখনো জমে ওঠেনি নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা। প্রতীক বরাদ্দের পর গত সোমবার থেকে প্রচারণা শুরু হলেও এখনো আওয়ামী লীগ ছাড়া বাকি প্রার্থী ও তাঁদের অনুসারীদের তৎপরতা চোখে পড়েনি। জেলাজুড়ে সাঁটানো ব্যানার-পোস্টারের প্রায় সবই আওয়ামী লীগের প্রার্থীর।
সাধারণ ভোটারদের সাথে কথা বলে জানা যায়, আওয়ামী লীগের বাইরে জেলায় শক্ত অবস্থান রয়েছে বিএনপি ও আঞ্চলিক দল প্রসিতপন্থী ইউপিডিএফের। এ দুটি দল নির্বাচনে অংশ না নেওয়ায় নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হওয়ার সম্ভাবনা নেই বলে মনে করছেন তারা। ভোটারদের নির্বাচন নিয়ে আগ্রহ কম থাকায় তাদের কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া কঠিন হবে বলেও অভিমত অনেক ভোটারের।
রিটার্নিং কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার ২৯৮ নম্বর সংসদীয় আসনে ভোটার সংখ্যা ৫ লাখ ১৫ হাজার ৩৪৬ জন। ভোটকেন্দ্র রয়েছে ১৯৬টি।
০ views