রাকিবুল হাসান, গাজীপুর জেলা প্রতিনিধি : ২২ জানুয়ারী সোমবার সকাল আটটা চারদিকে ঘন কুয়াশা, এরই মাঝে কুয়াশার ভেতর গুড়ি গুড়ি বৃষ্টির মতো আকাশ থেকে পানি ঝরছে। সবকিছু উপেক্ষা করে মানুষ আসতে শুরু করেছে ক্যাম্পাসের মুল মাঠে। যেখানে সাজানো হয়েছে পিঠা উৎসবের স্টল। স্টলের টেবিলে সারি সারি করে সাজানো রয়েছে বাহারি রঙের পিঠা। এ আয়োজন গাজীপুরের শ্রীপুর মুক্তিযোদ্ধা রহমত আলী সরকারি কলেজের পিঠা উৎসবের আয়োজন।
গাজীপুরের শ্রীপুর মুক্তিযোদ্ধা রহমত আলী সরকারি কলেজে পিঠা উৎসব শুরু হয়েছে। শিক্ষক পরিষদের ব্যবস্থাপনায় ক্যাম্পাসের মুল মাঠে সকাল আটটা থেকে এ উৎসব শুরু হয়। রাত আটটা পর্যন্ত চলবে এ আয়োজন। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের তৈরী বাহারি পিঠা দিয়ে কলেজের বিভিন্ন বিভাগের স্টলগুলো সাজানো হয়েছে। উৎসবস্থলের এক পাশে রয়েছে স্থায়ী মঞ্চ, যেখান থেকে পরিচালনা হচ্ছে সার্বিক কার্যক্রম।
সকাল ১০টায় অধ্যক্ষ প্রফেসর পিয়ারা নার্গিস, উপাধ্যক্ষ নূরুন্নবী আকন্দ ও শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রভাষক আবু বাক্কার ছিদ্দিক আকন্দ বেলুন উড়িয়ে উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।
সকাল থেকেই উৎসবে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ স্টলগুলোতে ভীড় করতে থাকে। স্বাদ নিতে স্টলের সামনে দাঁড়িয়েই পিঠা খাওয়ার ধুম পড়ে যায়। উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের লোকজন এ উৎসবের আয়োজন ঘুরে ঘুরে দেখেন।
শ্রীপুর মুক্তিযোদ্ধা রহমত আলী সরকারি কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী সুমাইয়া জানায়, ২৮ রকমের দেশীয় পিঠা দিয়ে তারা স্টল সাজিয়েছে। দুপুর ২টার মধ্যে অর্ধেকের বেশি পিঠা বিক্রি হয়ে গেছে। একই রকম জানালেন, উচ্চ মাধ্যমিক স্টলের সুমন ও সাদমীম। পিঠা বিক্রি করে ভাল সম্মানী পেয়েছে বলেও জানায় তারা।
কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর পিয়ারা নার্গিস বলেন, শুধু সংষ্কৃতির চর্চা হবে, কিন্তু একাডেমিক গতিশীলতা থাকবে না তা হবে না। আবার একাডেমিক আয়োজন থাকবে, কিন্তু সংষ্কৃতির চর্চা হবে না তা হবে না। উভয়েরই মেলবন্ধন আমাদের শিক্ষা কার্যক্রমকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।
উপাধ্যক্ষ নূরুন্নবী আকন্দ বলেন, পিঠা উৎসবের এমন আয়োজন শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও এলাকার মানুষের মধ্যে ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে। কলেজের উদ্যোগ ও শিক্ষক পরিষদের ব্যবস্থাপনায় এ আয়োজন সকলের চলমান কার্যক্রমকে প্রেরণা জুগিয়েছে। বর্তমান প্রজন্মকে বাঙালীর ঐতিহ্য বাহারি পিঠার পরিচয় ঘটাতেও উৎসবটি বেশ ফলপ্রসু হয়েছে।
শ্রীপুর মুক্তিযোদ্ধা রহমত আলী সরকারি কলেজ শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রভাষক আবু বাক্কার ছিদ্দিক আকন্দ বলেন, ১০ টি বিভাগের পক্ষ থেকে ১০টি, স্নাতক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায় থেকে দুটি ও রোভার স্কাউটের ১টিসহ মোট ১৩টি স্টল এ উৎসবে স্থান পেয়েছে। এছাড়াও ১টি স্টলে রক্তের গ্রুপ বিনামুল্যে পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ভাপা, মালপোয়া, হাঁড়ি, লবঙ্গ লতিকা পিঠাসহ কমপক্ষে ৪০ প্রকার পিঠার আয়োজন ছিল উৎসবে। শিক্ষক পরিষদের ব্যবস্থাপনায় আগামীতেও শিক্ষা ব্যবস্থার পাশাপাশি ব্যাতিক্রম এসব আয়োজন থাকবে। অনুষ্ঠানে উপজেলার বিভিন্ন সামাজিক, সাংষ্কৃতিক ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানসহ সংশ্লিষ্টরা উৎসব উপভোগ করতে দর্শণার্থী হিসেবে পরিদর্শন করেন। শ্রীপুর পৌরসভার মেয়র আনিছুর রহমান আয়োজনে সন্তোষ প্রকাশ করে ভবিষ্যতে তাঁর অংশগ্রহণ নিশ্চিতের ঘোষণা দিয়ে যান