দৈনিক শিরোমণি ডেস্ক রিপোর্ট: বাজেট প্রত্যাখান করে ৫ দলীয় বাম জোটের সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল। ধনী গরিব বৈষম্যের ও লুটেরাদের স্বার্থে প্রণীত এই বাজেট প্রত্যাখান ও দুর্নীতিবাজ বেনজির,আজিজ সহ সকল কালো টাকার মালিক ঋণখেলাপী-অর্থ পাচারকারী-ব্যাংক লুটপাটকারীদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত এবং দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবিতে আজ ০৮ই জুন শনিবার সকাল ১১ টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ৫ দলীয় বাম জোটের এক সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয় সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন জোটের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক কমরেড এম এ সামাদ।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ৫ দলীয় বাম জোটের কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদের সমন্বয়ক ও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি(মার্কসবাদী)র সভাপতি কমরেড এম এ সামাদ ও সাধারণ সম্পাদক কমরেড সাহিদুর রহমান বিপ্লবী কমিউনিস্ট কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক কমরেড বিধান দাস সোশ্যালিস্ট পার্টির সভাপতি কমরেড শাহীন আহমেদ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ) সভাপতি মুফতি তালেবুল ইসলাম বাংলাদেশের সমতা পার্টির সভাপতি কমরেড সামসুল হক সরকার
নেতৃবৃন্দ বক্তব্য বলেন প্রস্তাবিত বাজেট গরীর মারার বাজেট গতানুগতিক ও ঋণনির্ভর ঘাটতি বাজেট ও লুটেরা বান্ধব হিসেবে এই বাজেট প্রত্যাখ্যান করছি গরীব মেহনতি মানুষের পক্ষে নতুন করে গণমুখী বাজেট প্রণয়নের আহব্বান জানাচ্ছি্
নেতৃবৃন্দ বলেন, বেনজির আজিজ সহ সকল দুর্নীতিবাজ ব্যাংক লুটপাটকারি অর্থ পাচারকারি ও কালো টাকার মালিকদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত ও দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে
এই বাজেট গরীর মারার বাজেট ২ লক্ষ ৫৬ হাজার কোটি টাকার ঘাটতি বাজেটে দেশি বিদেশি ঋণের উপর নির্ভর করা হয়েছে। এই ঘাটতি কোথা থেকে পুরন হবে এমনিতেই সরকার ঋণের ভারে জর্জরিত। ফলে ঋণের সুদ পরিশোধের জন্যই বাজেটে বিরাট অংকের ১ লক্ষ ১৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা অর্থাৎ মোট বাজেটের ৭ ভাগের একভাগ বরাদ্দ রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে। এই বাজেট গরীর কে আরও গরীব আর ধনীকে আরও ধনী করবে।
বাংলাদেশের ব্যাংকগুলো এখন দেওলিয়া হওয়ার পথে ব্যাংকগুলো থেকে সরকার ঋণ করায় এবং খেলাপী ঋণের কারণে ব্যাংকগুলো তারল্য সংকটে ভুগে দেউলিয়া হওয়ার পথে। আর্থিক খাতের সংকট নিরসনে বাজেটে কোন দিক নির্দেশনা নাই। বেকার সমস্যার সমাধান ও কর্মসংস্থানেরও কোন দিক নির্দেশনা বাজেটে নাই। তাছাড়া মূল্যস্ফীতি যেখানে প্রায় ১০% সেখানে বর্তমান প্রবৃদ্ধি যে ঋণাত্মক তা আড়াল করে আগামীতে প্রবৃদ্ধি ৬.৭৫% এবং মূল্যস্ফীতি ৬.৫% অর্থাৎ বাস্তবে প্রবৃদ্ধি ০.২৫% ধরা হয়েছে। তাও কীভাবে অর্জিত হবে তার কোন দিক নির্দেশনা নাই।
টাকার অবমূল্যায়, মূল্যস্ফীতি ও জিডিপি বিবেচনায় নিলে বাজেটে শিক্ষা-স্বাস্থ্য-কৃষি এবং সামাজিক সুরক্ষা খাতেও বরাদ্দ বাস্তবে বাড়েনি। টাকার অংকে সামাজিক সুরক্ষা খাতে ১০ হাজার কোটি টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব করা হলেও বাস্তবে তা পেনশনভোগী ও মুক্তিযোদ্ধা ভাতায় চলে যাবে। উপরন্তু কৃষি খাতে ২৩-২৪ অর্থ বছরের সংশোধিত বাজেটের তুলনায় প্রস্তাবিত বাজেটে কৃষি খাতে বরাদ্দ কমানো হয়েছে। দেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য বাজেটে তেমন কিছু নেই।
বাজেটে শ্রমজীবী জনগোষ্ঠীর খাদ্য নিশ্চয়তার জন্য রেশনিং এর জন্য কোন বরাদ্দ রাখা হয়নি। বাজেটে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ এবং দুর্নীতি রোধে কোন কার্যকর দিক নির্দেশনা নাই। যেখানে আজিজ, বেনজির, আনার কাÐ সরকারের দুর্নীতির ভয়াবহতা ফুটে উঠেছে সেখানে এবারেও কালো টাকা সাদা করার সুযোগ রেখে দুর্নীতিকে আরো উৎসাহিত করার ব্যবস্থা হচ্ছে। ৫ দলীয় বাম জোটের নেতৃবৃন্দ ধনীক লুটপাটকারীদের স্বার্থের এই বাজেট না করে গরীব মেহনতি মানুষের স্বার্থে নতুন করে বাজেট প্রণয়নের জোর দাবি জানান। সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল জাতীয় প্রেসক্লাব থেকে সচিবালয় তোপখানা রোড ঘুরে পল্টন মোড়ে জোটের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে গিয়ে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যর মধ্যে দিয়ে শেষ হয়।