দৈনিক শিরোমণি ডেস্ক রিপোর্ট:বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক সাহসী নেত্রী, অ্যাডভোকেট নুপুর আখতার, যিনি সম্প্রতি ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানে পুলিশের গুলিতে আহত হয়েছেন, এখন শারীরিকভাবে এক নতুন লড়াইয়ের মধ্যে আছেন। জানানো হয়েছে, গত ১৭ ই ডিসেম্বর বুধবার শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল ঢাকায় তার মাথার অপারেশন হয়; যিনি এত প্রতিকুলতার পরও গণতন্ত্রের জন্য তার আদর্শিক সংগ্রাম থামবে না বলে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন।
গত মার্চ মাসে, গণঅভ্যুত্থান ২০২৪-এ, যখন দেশের বিভিন্ন জায়গায় ছাত্ররা ও সাধারণ জনগণ রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক বৈষম্যের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমেছিল, তখন তিনি ছিলেন আন্দোলনের এক প্রধান মুখ। পুলিশের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে, তিনি পুলিশি আক্রমণের শিকার হন এবং গুলির আঘাতে গুরুতর আহত হন। গুলির আঘাতে তার মাথায় মারাত্মক ক্ষত হয়, এবং চিকিৎসকরা তাকে জরুরি অপারেশনের জন্য পরামর্শ দেন।
এদিকে, নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এক আবেগময় পোস্টে অ্যাডভোকেট নুপুর আখতার জানিয়েছেন, “আমার শারীরিক আঘাত ক্ষণস্থায়ী, কিন্তু আমাদের সংগ্রাম, আমাদের আদর্শ কখনোই থামবে না। এই আন্দোলন, এই সংগ্রাম চিরকাল আমাদের পথপ্রদর্শক হয়ে থাকবে। আমি জানি, আমার শারীরিক অবস্থার কারণে কিছু সময় চুপ থাকতে হবে, কিন্তু আমার আদর্শ ও বিশ্বাস কখনোই চুপ থাকবে না। আমরা একসাথে থাকলে কোনো শক্তিই আমাদের থামাতে পারবে না।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের সংগ্রাম কখনো শেষ হবে না। ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থান আমাদের জন্য এক নতুন সূচনা, যেখানে সবাই একসাথে, সমান অধিকারের জন্য, ভয় না পেয়ে দাঁড়িয়েছে। আমাদের একতা আমাদের শক্তি।”
অ্যাডভোকেট নুপুর আখতার একজন সুপরিচিত মানবাধিকারকর্মী এবং সামাজিক ন্যায়বিচারের জন্য তিনি দীর্ঘদিন ধরে লড়াই করে আসছেন। ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানে তিনি ছিলেন সামনের কাতারে অগ্রগামী এক নারী আইনজীবী, আর তার অগ্রগামীতার ও নেতৃত্বের জন্য ইতোমধ্যেই সর্ব মহলে প্রশংসিত হয়েছেন এ সাহসী নারী।
নুপুর আখতার তার পোস্টে তার সমর্থকদের কাছে ধন্যবাদ জানিয়েছেন এবং তার শারিরীক সুস্থতার জন্য সবার প্রার্থনা চেয়েছেন। তিনি জানান, তার শরীরের ক্ষত যতই গভীর হোক, তার মনোবল এবং সংগ্রাম একটুও দুর্বল হবে না। তিনি আশা করেন, খুব শিগগিরই শারীরিক প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে আবারো রাজপথে ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠায় আবারো ফিরবেন।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, অ্যাডভোকেট নুপুর আখতার যেভাবে গণঅভ্যুত্থান ও তার রাজনৈতিক সহযোদ্ধাদের জন্য নিজের জীবন বিপন্ন করেছেন, তা দেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনে নতুন এক অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত হবে। তার সাহসিকতা এবং একাগ্রতা ভবিষ্যতে প্রেরণার উৎস হিসেবে থাকবে।
এদিকে, রাজনৈতিক নেতা এবং মানবাধিকারকর্মীরা তার শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নিচ্ছেন এবং তার দ্রুত সুস্থতার জন্য প্রার্থনা করছেন। তার সহযোদ্ধারা একত্রিত হয়ে জানিয়ে দিয়েছেন, তারা তার পাশে আছেন এবং তার সংগ্রাম কখনো থামবে না।