আব্দুল খালেক, রৌমারী উপজেলা প্রতিনিধি : দিনমজুর লাল মিয়া (৫২) নামের একব্যক্তিকে মদের বোতল দিয়ে ফাঁসানোর অভিযোগ উঠেছে রৌমারী থানা পুলিশের বিরুদ্ধে। এর প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে ভুক্তভোগি পরিবার ও এলাকাবাসী। বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৩ টার দিকে কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার রৌমারী সদর ইউনিয়নের বড়াইবাড়ী গ্রামে এ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল পালন করা হয়।
এলাকাবাসী রফিকুল ইসলাম ও ইউনুছ আলী অভিযোগ করে বলেন, দিনমজুর লাল মিয়াকে কখনও অবৈধ ব্যবসা করতে দেখি নাই। সে একজন নিরহ ব্যক্তি। সারা বছর কাজ করে খায়। আমরা এর সঠিক তদন্ত চাই, চক্রান্তমূলকভাবে তাকে এ এ মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। তাদের সঠিক বিচার কামনা করেন।
ভুক্তভোগি লাল মিয়ার স্ত্রী রোজিনা আকতার অভিযোগ করে বলেন, বুধবার দিনগতরাত ৩ টার দিকে রৌমারী থানার একদল পুলিশ আমার বসতবাড়ি ঘিরে ঘরে ঢুকার জন্য পুলিশ ডাকাডাকি করতে থাকে। পরে পুলিশকে বলছি কেন আমার বাড়িতে আসছেন। তখন পুলিশ আমাকে ধমক দিয়ে বলে, আপনার স্বামী মদের ব্যবসা করে এবং তার বিরুদ্ধে অনেক রিপোর্ট আছে। তখন আমি বলি আমার স্বামী তো কোন অবৈধ ব্যবসা করে না। পরে ঘরের দরজা খুলে দেওয়ার সাথে সাথে পুলিশ একটি মদের বস্তা তরিঘড়ি করে ঘরে ঢুকে। তখন আামি বলি আমার স্বামী তো মদের ব্যবসা করে না। তাহলে আপনারা মদের বস্তা নিয়ে কেন ঘরে ঢুকছেন বলার সাথে আমাকে লাথি মারে পুলিশ। আমার পোলা বিদেশ থেকে ৫ লাখ টাকা জমি কেনার জন্য পাঠায়ছে। ব্যাংক থেকে ওই টাকাগুলো ঘরে ট্রাংকে রাখছি, পুলিশ ট্রাংককের তালা ভেঙ্গে টাকা নিয়ে গেছে। আমি এর সঠিক বিচার চাই।
ভুক্তভোগী লাল মিয়ার ছেলে রাকিবুল ইসলাম জানান, আমার পরিবারে কেউ চোরাচালানের সাথে জড়িত না। আমরা দিনমজুরী কাজ করে খাই। পুলিশ আমার বাবাকে অন্যায়ভাবে মদের বোতল দিয়ে আটক করেছে। আমি এর ন্যায় বিচার চাই।
স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য আরসাদ হোসেন হেলাল বলেন, পুলিশ এখান থেকে মাদক সহকারে লাল মিয়াকে ধরে নিয়ে গেছে। এ এলাকায় বসবাস করছি আমরা জীবনও কোনদিন দেখিনি লাল মিয়া কোনদিন বিড়ি সেগারেট খায়। তারপরও মদের কাটুর্ন নিয়ে তাকে ঘর থেকে ধরে নিয়ে গেল, এটা আমাদের এলাকাবাসীর ক্ষোভ। একজন নিরহ মানুষকে এতো বড় সাজার মধ্যে কে বা কারা এই চক্রান্ত করে ফেলাইলো। এলাকাবাসীর পক্ষে আমরা এর নিঃশর্ত মুক্তি চাই এবং এর তদন্ত সাপেক্ষে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য দাবী করছি।
রৌমারী থানার অফিসার ইনচার্জ লুৎফর রহমান বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে লাল মিয়ার বাড়ির রান্নাঘর থেকে মদ পেয়েছি। ওই বাড়ি থেকে দীর্ঘদিন যাপত মাদক পাচার করার ব্যাপারে সহযোগিতা করে আসছে এবং সেখানে মাদক মজুদ রাখেন। আমরা সেখানে মাদক পেয়েছি। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ঘরের এক কোনে গিয়ে লুকায় লাল মিয়া। পরে তাকে মাদকের মামলা দিয়ে কুড়িগ্রাম আদালতে প্রেরণ করা হয়।