বিশ্ববিদ্যালয় হল এমন এক প্ল্যাটফর্ম,যেখানে বয়সের রোমান্টিকতা, নবযৌবনের আবেগ ও ব্যক্তিজীবনের স্বাধীনতা সব মিলিয়ে ব্যক্তিমনে এমন এক ভাবের উদ্ভব ঘটে, যা একজন শিক্ষার্থীকে অতি সহজেই ধর্মীয় মনোভাব থেকে বিচ্ছিন্ন করে। হোক তা ইসলাম ধর্মের, হোক তা হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ধর্মের । তবে এখানে ধর্ম বিবেচ্য বিষয় না, এখানে বিবেচ্য বিষয় বয়সের আবেগ। আর সেই আবেগ প্রতিফলিত হয় ব্যক্তি জীবনে। তবে এটা মেনে নিতেই হবে যে, ধর্মীয় চালচলনে বিশ্ববিদ্যালয় কখনো বাধা দেয় না। বরং প্রতিটি শিক্ষার্থীর ইতিবাচক ও নেতিবাচক চালচলন তার ব্যক্তিবিশেষ স্বাধীনতা বলে বিবেচিত হয় বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে । কথাটা অনেকের কাছে গ্রহণযোগ্যতা না পেলেও এটাই বাস্তব । কেননা আমি এখনোও বিশ্ববিদ্যালয় জীবন পাড়ি দিচ্ছি । থাক সেকথা, এবার মূল কথায় আসি ।
বাস্তব অভিজ্ঞতায় বলছি , বাংলাদেশে এমন কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিপার্টমেন্টের নেই, যেখানে কিনা নবীওয়ালা সুন্নতি শিক্ষক বা শিক্ষার্থী নেই । দাড়ি, টুপি ,পাঞ্জাবি পরিধান এর মাধ্যমে এমনভাবে সুন্নত লালন করে যে , স্বাভাবিকতোই যেকোনো ব্যক্তির কাছে ওই সুন্নতি ভাই মাদ্রাসার নাকি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তা বোঝা কষ্টকর হয়ে পড়বে । অতএব এটা মানতেই হবে যে, বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে ইসলামিক চালচলন শুধুমাত্রই ব্যক্তিস্বাধীনতার মতোই বিবেচিত হয়।
এবার কথার পাতাটি অন্যদিকে টানি। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে বয়সের রোমাঞ্চকতা ও রোমান্টিকতার আবেগ আর ব্যক্তি স্বাধীনতা থাকার সত্বেও একমাত্র আল্লাহর ভয়ে নিজেকে বয়সের পাপ থেকে ফারাক করে নবীওয়ালা সুন্নতি লালন করা এবং ধর্মীয় আদেশ মেনে চলা যে , কত বড় জেহাদ হতে পারে ,তা স্বয়ং আল্লাহ পাকই ভালো জানেন । এমন বলছি না যে,বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে নবীওয়ালা সুন্নত লালন করা প্রতিবন্ধকতার শামিল । তবে ওই প্রতিবন্ধকতা হলো শুধুমাত্র মনের, যে মন কিনা পাপের দিকে নিজেকে আকৃষ্ট করে এবং মনে মনে কুমন্ত্রণা দেয় । অতএব বলা যেতে পারে, প্রতিনিয়তই শয়তানের পাপীষ্ঠ মনোভাব ও ধর্মীয় মনোভাবের মাঝে এক বড় জেহাদ সংঘটিত হয় মনের রাজ্যে। আর যে ওই শয়তানের পাপিষ্ঠ মনোভাবের বিরুদ্ধে জেহাদ করে , ইসলামিক মনোভাবকে জয় করে ব্যক্তিজীবনে লালন করতে পারে, সেই তো দুনিয়া ও আখেরাতে কামিয়াব । দুনিয়াতে কামিয়াব বলার উদ্দেশ্য এই যে, পাপ কাজ থেকে বিরত থেকে একমাত্র পড়াশোনায় মনোযোগী হয়ে জীবনকে আরো উচ্চ প্রতিষ্ঠিত পর্যায়ে পৌঁছানো ও ব্যক্তিজীবনকে মাধুর্যপূর্ণ করা সম্ভব শুধুমাত্র বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে ইসলামিক মনোভাব লালন করার প্রেক্ষিতে । অতএব বলার অপেক্ষা রাখে না যে, দুনিয়া ও আখিরাতে ওই ব্যক্তির জীবনেই কামিয়াব ।
শেখ সায়মন পারভেজ (হিমেল),
শিক্ষার্থী, ফার্মেসি বিভাগ,
মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।